বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

সমস্ত ধ্বংসাবশেষই লক্ষ্য করিয়া দেখিল। সে ধনভূতির নগর, স্তূপ ও সঙ্ঘারামের ধ্বংসাবশেষ বিশেষভাবে পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছিল। ইহার পর কিছুকাল নূতন ভিক্ষু স্থানান্তরে চলিয়া গেল। তখন মধ্যাহ্নে আভীর রমণীগণ আমার ছায়ায় বসিয়া বলিত, “সন্ন্যাসী আপনার দল আনয়ন করিতে মধ্যদেশে গমন করিয়াছে, শীঘ্রই প্রত্যাবর্ত্তন করিবে।”

 বস্তুতঃ শৈব সন্ন্যাসী প্রায় তিন মাসকাল পরে অন্যূন পঞ্চাশৎজন অল্পবয়স্ক সন্ন্যাসী লইয়া পুনরাগমন করিল। নবাগত ভিক্ষু সম্প্রদায় ধনভূতির নগরের ধ্বংসাবশেষের সর্ব্বোচ্চস্থানে গৃহ নির্ম্মাণ করিয়া বাস করিতে লাগিল। প্রথম যে সন্ন্যাসী আভীর-গ্রামে আসিয়াছিল সেই ব্যক্তিই নূতন সঙ্ঘারামের মহাস্থবির হইয়াছিল। ইহারা সঙ্ঘারামকে মঠ বলিত, মহাস্থবিরকে মঠাধীশ বা মঠাধিপ বলিত এবং রাজার ন্যায় সম্মান করিত। বৌদ্ধসঙ্ঘের ভিক্ষুগণের ন্যায় স্বাধীনতা বা স্বেচ্ছাচারিতা এই নূতন সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিলক্ষিত হইত না। ইহারা সর্ব্বদাই অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও উপাসনায় মগ্ন থাকিত, কঠোর আত্মসংযমে জীবন অতিবাহিত করিত, জ্যেষ্ঠ ও স্থবিরগণকে পিতৃতুল্য বোধে সম্মান করিত এবং স্ত্রীজাতিকে কালব্যাল জ্ঞানে দূর হইতে পরিহার করিত।

 আভীরগণের সাহায্যে স্তূপ ও সঙ্ঘারামের ধ্বংসাবশেষ হইতে পাষাণ সংগ্রহ করিয়া স্তূপের দক্ষিণদ্বারের সম্মুখে সন্ন্যাসিগণ কয়েকটি ক্ষুদ্র গৃহ নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। বহুকাল পরে প্রাচীন স্তূপের ধ্বংসাবশিষ্টের অনুসন্ধান করিতে যাইয়া তোমরা তাহার ভিত্তি দেখিতে পাইয়াছিলে। সন্ন্যাসিগণ সেই গৃহে পূজা করিতেন। পল্লীবাসী আভীরগণের উপহার ও বনজাত ফলমূল তাঁহাদিগের জীবন ধারণের উপায় হইয়াছিল। সন্ন্যাসিগণ অবসরমত বনপর্য্যটন করিতেন। তখন আটবিক প্রদেশে সহস্র

১৪৯