বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

পাষাণের কথা

হইয়াছে। কপোতিক সঙ্ঘারামের মহাস্থবিরের ছিন্নশীর্ষ দক্ষিণ নগরদ্বারে কীলকবদ্ধ হইয়া আছে।

 মগধে সদ্ধর্ম্মের নাম—তথাগতের নাম লোপ পাইয়াছে। যাহারা এখনও বুদ্ধের নাম স্মরণ করিয়া থাকে, দশশীল বিস্মৃত হয় নাই, ভিক্ষু ও শ্রমণগণকে ভক্তি করে তাহারাও প্রকাশ্যে ব্রাহ্মণ্যধর্ম্মের আশ্রয়ে আছে। সদ্ধর্ম্মের লোপের সহিত স্তূপ, গর্ভচৈত্য, বিহার, সঙ্ঘারাম প্রভৃতিরও লোপ হইতেছে। উপাসক-উপাসিকা, ভিক্ষু-ভিক্ষুণী, স্থবির-স্থবিরাগণের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস হইয়া ক্রমশঃ লুপ্তপ্রায় হইয়াছে। তথাগতের ধর্ম্ম সাধারণ লোকে ক্রমশঃ বিস্মৃত হইতেছে, এখনও যাঁহাদের স্মরণ আছে তাঁহারাও মন্দিরবিহারাদির অভাবে যথারীতি উপাসনা করিতে পারেন না। মথুরা হইতে পাটলীপুত্র পর্য্যন্ত ও শ্রাবস্তী হইতে বিদিশা পর্য্যন্ত বৌদ্ধমন্দির, বিহার প্রভৃতির চিহ্নও দেখা যায় না। আমি বিংশতিবর্ষকাল চেষ্টা করিয়া এই নগরে বিদিশার সারীপুত্র ও মৌদ্‌গল্যায়নের ভস্মস্তূপের অনুরূপ, একটি স্তূপ প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ সংগ্রহ করিয়াছি। আমাদিগের সংখ্যার এত হ্রাস হইয়াছে যে, একটি স্তূপ নির্ম্মাণের ব্যয় সংগ্রহের জন্য আমাকে পাটলীপুত্র হইতে বিদিশা পর্য্যন্ত সকল নগরবাসীরই সাহায্য প্রার্থনা করিতে হইয়াছে। যখন পুষ্যমিত্রের অত্যাচারে মগধ ত্যাগ করিয়া মহাকোশলে আশ্রয় গ্রহণ করি, তখন তোমাদিগের বর্ত্তমান রাজার পিতা অগরাজু সিংহাসনে আসীন ছিলেন। চিরকাল এই রাজবংশ তথাগতের বাক্যে বিশ্বাস করিয়া আসিয়াছেন, সদ্ধর্ম্মের এই দারুণ দুর্দ্দিনেও ইহাঁদিগের বিশ্বাস অচল রহিয়াছে। চতুর্দ্দিকের উৎপীড়িত প্রকৃত বিশ্বাসীদিগের একমাত্র আশ্রয়স্থল, এই রাজ্যে এতদিন পরে স্তূপ ও মন্দির নির্ম্মাণের উপায় হইল। শুনিয়াছি,

২০