পাষাণের কথা
প্রথম তোরণের উপর দুইখণ্ড চতুষ্কোণ প্রস্তর স্থাপন করিয়া তাহার উপরেই দ্বিতীয় তোরণ স্থাপিত হইয়াছিল। দ্বিতীয় তোরণের শেষাংশে পূর্ব্বের ন্যায় মকর, স্তূপ ও মন্দির খোদিত। এই তোরণের মধ্যভাগে বেদির উপর স্থাপিত কয়েকটি পল্লব ও উহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া সিংহ। সিংহগণের ব্যবধানে প্রস্ফুটিত ও প্রস্ফুটনোন্মুখ পদ্মসমূহ অঙ্কিত। ইহার উপরে তৃতীয় তোরণ। ইহাও চতুষ্কোণ প্রস্তরদ্বয়ের উপর স্থাপিত এবং ইহার ও দ্বিতীয় তোরণের মধ্যে পূর্ব্বের ন্যায় কতকগুলি ক্ষুদ্র স্তম্ভ। এই স্তম্ভগুলির কিছু বিশেষত্ব আছে—যখন এই স্তম্ভগুলি খোদিত হয় তখন ভাস্করগণ শ্রেণীবিন্যাসে স্থান নির্দ্দেশের জন্য প্রতিস্তম্ভে বর্ণমালার এক একটি অক্ষর খোদিত করিয়াছিলেন। নাগরিকগণ যখন অসমাপ্ত ভাস্করকার্য্য দেখিতে আসিতেন, তখন তাঁহারা এই স্তম্ভগুলিতে নূতন প্রকারের অক্ষর দেখিয়া ভাস্করগণকে তাহার কথা জিজ্ঞাসা করিতেন। তদুত্তরে তাঁহারা জানাইয়াছিলেন যে, বহুকাল ভারতবর্ষে বাসহেতু তাঁহারা তদ্দেশপ্রচলিত বর্ণমালা ব্যবহারে অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছেন, তাঁহাদিগের মধ্যে যাবনিক বর্ণমালা লুপ্তপ্রায়। যে বর্ণমালা তাঁহারা ব্যবহার করিতেছেন, তাহা গান্ধার ও কপিশা প্রভৃতি দেশে প্রচলিত; উহা ভারতীয় বর্ণমালার অনুরূপ নহে। উহা দক্ষিণ দিক হইতে বামদিকে লিখিত হইয়া থাকে ও উহার লিখন-প্রণালী ভারতীয় বর্ণমালার লিখন-প্রণালী হইতে সরল। পারসিকগণ যখন ঐরাণদেশীয় রাজগণের নেতৃত্বে উত্তর পশ্চিম প্রদেশসমূহ জয় করিয়াছিলেন, তখন তাঁহাদিগের রাজকার্য্যালয়ে ব্যবহার প্রযুক্ত এই বর্ণমালাও তত্তদ্দেশবাসিগণ কর্ত্তৃক ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে। গান্ধার, কপিশা প্রভৃতি প্রদেশেও ভারতীয় বর্ণমালার প্রচলন আছে, তবে তাহা পারসিক