আবরণগুলির স্তম্ভসমূহের শীর্ষে আলম্বন স্থাপিত হইয়াছিল। আলম্বনের শীর্ষদেশ ঈষৎ গোল ও মসৃণ; প্রতি পার্শ্বে সমান্তরাল রেখাদ্বয়ের অভ্যন্তরে, উপরে একশ্রেণী চতুর্ভুজ ও নিম্নে একশ্রেণী পুষ্পমাল্যে লম্বিত ঘণ্টা; এতদ্দয়ের অভ্যন্তরে কোন স্থানে হস্তী, কোন স্থানে বা মকরমুখ হইতে নির্গত মৃণাল বক্রগতিতে চলিয়া গিয়াছে, অবশিষ্ট স্থান পত্র-পুষ্প-ফল-সিংহ-হস্তি-বানর প্রভৃতি জীব ও নানাবিধ চিত্রে সুশোভিত। আলম্বনের কোন স্থানে প্রদাতার নাম নাই বটে, কিন্তু প্রতি চিত্রের নিম্নে বা উপরে উঁহার নাম অঙ্কিত আছে ও আলম্বন যে স্থানে শেষ হইয়াছে, সেই স্থানে একটি উপবিষ্ট সিংহমূর্ত্তি অঙ্কিত আছে।
স্তূপ বা স্তূপবেষ্টনীর নির্ম্মাণকার্য্য যতদিন চলিতেছিল, ততদিন যবন ভাস্করগণ, রাজপুরুষ, শ্রমজীবী বা নিতান্ত পরিচিত ব্যক্তি ভিন্ন অপর কাহাকেও বেষ্টনীর মধ্যে প্রবেশের অধিকার দেন নাই। নির্ম্মাণকার্য্য শেষ হইলে যবনজাতীয় দেশীয় ভাস্করগণ রাজসমীপে যাইয়া সংবাদ জ্ঞাপন করিলেন। পরদিন প্রাতে নগর হইতে দলে দলে নাগরিক ও নাগরিকাগণ আসিয়া প্রান্তর আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল, কিন্তু রক্ষিগণ রাজাদেশে কাহাকেও বেষ্টনীর মধ্যে আসিতে দিল না। তখনও মঞ্চসমূহ অপসারিত হয় নাই; গুরুভার তোরণগুলি ঊর্দ্ধে উত্তোলন করিবার জন্য যে মৃৎস্তূপগুলি নির্ম্মিত হইয়াছিল, সেগুলি তখনও দূরে নিক্ষিপ্ত করা হয় নাই; ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত সর্ব্ববিধ আকারের ভগ্ন প্রস্তরখণ্ডগুলি পরিক্রমণের পথ আচ্ছন্ন করিয়াছিল। কিন্তু প্রবল বাসনার বলে সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় সেই বিশাল জনসঙ্ঘ বার বার আসিয়া মুষ্টিমেয় রক্ষিগণকে গ্রাস করিয়া ফেলিবার উপক্রম করিল। হস্তিপৃষ্ঠে, রথে, উষ্ট্রে, ও অশ্বে নাগরিকগণ আসিয়া বেষ্টনীর
৩৫