পাষাণের কথা
সুরাপানোন্মত্ত নাগরিক ও বারাঙ্গণাগণের দেহ মৃতদেহের ন্যায় পথে পথে লুণ্ঠিত হইতেছে। চিন্তাভারাবনতদেহে নিঃশব্দে সকলে রথারোহণে নগরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। অবশিষ্ট প্রদীপগুলি পরিচারকগণ নির্ব্বাপিত করিল। যে সকল অগ্নিকুণ্ড প্রজ্জ্বালিত হইয়াছিল, তৎসমুদয় হইতে ধূমরাশি উত্থিত হইতে লাগিল। রক্ষিগণ ব্যতীত বিশাল প্রান্তর জনশূন্য হইয়া গেল। ক্রমশঃ বায়ু বহিতে লাগিল। অল্পক্ষণ পরে বৃষ্টি আরম্ভ হইল। পথে শয়ন করিয়া যাহারা তখনও উৎসবের আমোদ ভোগ করিতেছিল, তাহারা আশ্রয়ানুসন্ধান করিতে বাধ্য হইল। ঝটিকা ও বৃষ্টির মধ্যে আর্ত্তিমিদোর অনাবৃত দেহে স্তূপবেষ্টনীর দক্ষিণ তোরণে অপেক্ষা করিতেছিলেন। ক্রমে অন্ধকার গাঢ় হইয়া আসিল, মুসলধারে বৃষ্টি পতিত হইতে লাগিল। কাহার প্রতীক্ষায় যবনশিল্পী নিদ্রা ও আশ্রয় ত্যাগ করিয়া তোরণদ্বারে দণ্ডায়মান ছিলেন, তাহা আর বুঝা গেল না।
৬৪