বনস্পরের রত্নখচিত উষ্ণীষ ধূলিতে লুণ্ঠিত হইল; দণ্ডনায়ক লল্লের শিরস্ত্রাণ পাদপেষণে চূর্ণ হইয়া গেল। বেষ্পশির মহাদেবী জনতার তাড়নায় স্তূপের অপর প্রান্তে উপস্থিত হইলেন, তাঁহার আর সম্রাটের আগমন দর্শন ঘটিল না। অত্যন্ত পীড়িত হইয়া খরপল্লান খড়্গে হস্তক্ষেপ করিয়া দেখেন, তাহা নিষ্কাশনের উপায় নাই। প্রধান অমাত্য, সভাসদ্ ও পরিচারক, দৌবারিক ও ভিক্ষু, অশ্বারোহী ও পদাতিক, স্ত্রী ও পুরুষ সেই বিশাল জনসঙ্ঘে একত্র মিলিত হইয়া গেল, পদমর্য্যাদা অন্তর্হিত হইল। সম্রাট উপস্থিত হইলে তাঁহার বাহিনীর জন্য পথ মুক্ত হইল বটে; কিন্তু জয়ধ্বনি ব্যতীত তাঁহার আর কোনও অভ্যর্থনা হইল না। তিনি আসিয়া কাষ্ঠনির্ম্মিত নগর হইতে দূরে পটমণ্ডপে প্রবিষ্ট হইলেন। জনসঙ্ঘ যথাস্থানে প্রত্যাবর্ত্তন করিতে করিতে পূর্ব্বদিকের অন্ধকার দূর হইতে লাগিল, শিশিরসিক্ত প্রভাতে উৎসবের দিনে দৌবারিক ও প্রহরী ব্যতীত সমস্ত নগর সুষুপ্তিমগ্ন অবস্থায় দৃষ্ট হইল। প্রভাতে উৎসব আরব্ধ হইল। সাম্রাজ্যের উৎসব আটবিক নগরের উৎসবের ন্যায় নহে, তাহাতে উচ্ছৃঙ্খলতা, বিশৃঙ্খলতার লেশমাত্র দেখা যায় নাই। ধীরে ধীরে কাষ্ঠনির্ম্মিত নগরের চতুষ্পার্শ্ব হইতে সমবেত ভিক্ষুমণ্ডলী স্তূপবেষ্টনীর মধ্যে আসিয়া সমাগত হইলেন। প্রাচীন স্তূপ নবসংস্কারের জন্য নূতন বলিয়া বোধ হইতেছিল। মহাস্থবির পার্শ্ব স্তূপের আর কোনও সাজসজ্জার আবশ্যক বোধ করেন নাই; তবে রাজপুরুষগণ বেষ্টনীর বাহিরে ও পরিক্রমণের পথে যথাযোগ্য সজ্জা প্রস্তুত রাখিয়াছিলেন। সূর্য্যোদয়ের অল্পক্ষণ পরেই উৎসব আরব্ধ হইল। রাজস্কন্ধাবার হইতে বেষ্টনীর পূর্ব্বতোরণ পর্য্যন্ত পাষাণ নির্ম্মিত পথ বহুমূল্য বস্ত্রে আচ্ছাদিত হইল, সমান্তরালে প্রোথিত হৈমদণ্ডশ্রেণীর উপরে মণিমুক্তাখচিত বহুমূল্য পট্টবাস
৮৫