“আমার সধবা অবস্থায় তারাদিদি আমাকে যেরূপ ভালবাসিত, বিধবা অবস্থায় যেন তাহার অপেক্ষা অধিক পরিমাণে ভালবাসিতে আরম্ভ করিল, এবং প্রাণের সহিত আমাকে যত্ন করিতে লাগিল। পরিশেষে এরূপ হইয়া উঠিল যে, আমাকে একদণ্ড না দেখিতে পাইলে সে অস্থির হইয়া পড়িত। আমারও ভালবাসা ক্রমে তাহার উপর বদ্ধমূল হইয়া আসিতে লাগিল। আমার মনের সুখ, আনন্দ, দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণা প্রভৃতি সমস্তই তারাদিদির নিকট বলিলে, মন যেন সন্তোষের উদয় হইত, এবং তাহার কথা শুনিতে, তাহার নিকট উপদেশ ও পরামর্শ গ্রহণ করিতে মন যেন সর্ব্বদাই ব্যস্ত থাকিত। আমি তারাদিদির কথায় দিন দিন কেন এরূপ ভাবে বশীভূত হইয়া পড়িতে লাগিলাম, তাহা কিন্তু আমি নিজেই বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না, বা বুঝিবার চেষ্টাও করিলাম না। তারাদিদি যে কে, তাহার চরিত্রই বা কি প্রকার, তাহার একটু সংক্ষিপ্ত পরিচয় এই স্থানে প্রদান করা, বোধ হয়, নিতান্ত আবশ্যক। আমি তাহার চরিত্র সম্বন্ধে সমস্ত কথা অবগত না থাকিলেও যতদূর অবগত আছি, তাহাই এই স্থানে বর্ণন করিতেছিমাত্র। ইহাতেই আপনারা বুঝিতে পরিবেন, তারদিদির চরিত্র কি প্রকার।”
পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১১
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাহাড়ে মেয়ে।
১১