বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাহাড়ে মেয়ে।
১৯

 “এই সময় আমি আমার জীবনের এক অধ্যায় শেষ করিয়া অন্য অধ্যায়ে প্রবেশ করিলাম। হৃদয়ের সমস্ত দুঃখ ও ভাবনা দূর করিয়া ‘মহামুখে’ নিবিষ্ট হইলাম। যাহাকে এখন আমি মহাদুঃখ বলিয়া জানিতে পারিতেছি, তখন তাহাকেই মহাসুখ জ্ঞান করিয়াছিলাম। যাহাকে ভয়ানক বিষ বলিয়া এখন আমি বুঝিতে পারিতেছি, তখন তাহাকেই অমৃত বলিয়া মহাসুখে পান করিয়াছিলাম। যে সর্ব্বনাশী রাক্ষসীর কথায় আমার ইহকাল গিয়াছে, পরকাল নষ্ট হইয়াছে, যে মহাপাপের কথা কর্ণে প্রবেশ করিলে কঠোর প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন হয়, সে কথা, সেই রাক্ষসীর মায়ায় সে সময় জানিতে পারি নাই। সেই হতভাগিনীর কথাকেই আমি প্রথমে বেদবাক্য সদৃশ জ্ঞান করিয়াছিলাম বলিয়াই, এখন আমার এই ভয়ানক দশা উপস্থিত হইয়াছে! ইহার পরে আরও যে কি হইবে, তাহা ভাবিতও পারিতেছি না!

 “জীবনের অন্য অধ্যায়ে প্রবেশ করিবামাত্রই আমার মনের গতি পৃথক হইয়া গেল। তারাদিদিকে যেরূপ ভালবাসিতাম, তখন ‘আর একজনকে’ তারা অপেক্ষা আরও ভালবাসিতে লাগিলাম। তাবাদিদিকে কিয়ৎক্ষণ না দেখিতে পাইলে, মনের মধ্যে যেরূপ কষ্ট হইত, তখন আবার সেই ‘আর একজনকে’ না দেখিতে পাইলে, হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া যাইতে লাগিল। কিন্তু সর্ব্বদা মনে ভয়, অমাদিগের লুক্কায়িত কাণ্ড সকল পাছে কেহ দেখিতে পায়, বা পাছে কেহ জানিতে পারে, অথবা আমার চরিত্রের উপর পাছে কেহ সন্দেহ করে। কিন্তু তারাদিদির এমনই কৌশল, এমনই নূতন নূতন উপায় উদ্ভাবনের ক্ষমতা যে, প্রায় এক বৎসরকাল আমি সেই ‘আর একজনের’ সহিত আমোদ আহ্লাদে বিভোর