পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

এখন হইতে সেইস্থানে পুরুষের আগমন আরম্ভ হইতে লাগিল। কেহ পরিচিতের ন্যায়, কেহ অপরিচিতের ন্যায়, কেহ প্রকাশ্যে, কেহ অপ্রকাশ্যে, কেহ একাকী, কেহ বন্ধুবান্ধব সমভিব্যাহারে সেই বাটীর ভিতর প্রবেশ ও বাটী হইতে বহির্গত হইতে লাগিল। কোন ঘরে গীতবাদ্য, কোন ঘরে নৃত্যগীত, কোন ঘরে হাসিঠাট্টা ও কোন ঘরে মদ্যপানাদি চলিতে লাগিল। সকলেই যেন আমোদে বিভোর, আহ্লাদে গদ গদ; দেখিয়া বোধ হইতে লাগিল, সকলেই যেন অপার সুখে সুখী। এইরূপে সমস্তরাত্রি অতিবাহিত হইয়া গেল।

 “প্রথম রাত্রিতে আমার এই সকল কিছুই ভাল লাগিল না; সমস্ত রাত্রির মধ্যে আমি আমার ঘরের বাহির হইলাম না। রাত্রিদিবসের পরিশ্রম হেতু আমরা উভয়েই অতিশয় ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম। সুতরাং স্থিরভাবে শয়ন করিয়া রহিলাম; কিন্তু ভালরূপে নিদ্রা হইল না, নানা প্রকার চিন্তা আমার হৃদয়ে প্রবেশ করিয়া আমার নিদ্রার ব্যাঘাত জন্মাইতে লাগিল। কখন আমার বৃদ্ধ পিতামাতার নিমিত্ত মন কাঁদিয়া উঠিতে লাগিল, তাঁহাদিগের যত্ন ও ভালবাসার কথা মনে উদিত হওয়ায়, চক্ষু দিয়া জলধারা বহিতে লাগিল। আবার পরক্ষণেই সে জলধারা মিলাইয়া গেল, আমার উপর তাঁহাদিগের কঠোর ব্যবহারের কথা মনে আসিল, আমাকে তাঁহারা হত্যা করিতে চাহিয়াছিলেন বলিয়া, তাঁহাদিগের উপর আমার রাগ হইতে লাগিল।

 “কখনও ভাবিতে লাগিলাম, ‘ইনি, ত এখন আমাকে ঘরের বাহির করিলেন, আমাকে যথেষ্ট দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করিয়া দিলেন; কিন্তু আমার উপর ইহার এখন যেরূপ ভালবাসা আছে, তাহা