পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাহাড়ে মেয়ে।
৩৫

যদি কোন অপরিচিত ব্যক্তি হঠাৎ আমার বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইতেন, তিনি সর্ব্বদা কালীবাবুকে আমার নিকট দেখিয়া আস্তে আস্তে আমার বাড়ী পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইতেন, পুনরায় তাঁহাকে আর কখনও দেখিতে পাইতাম না। এদিকে কালীবাবুও আমার উপর এরূপ ভাবে একাধিপত্য স্থাপন করিয়াছিলেন যে, আমি আর কাহারও সহিত কোনরূপ অমোদ-আহ্লাদে প্রবৃত্ত হইলে তিনি আর তাহা সহ্য করিতে পারিতেন না। যে কার্য্য করিলে কালীবাবুর অন্তঃকরণে কষ্ট হয়, সেই সকল কার্য্য করিতে আমারও মনোকষ্ট হইত। সুতরাং সহজেই আমাকে সেই সকল কার্য্য হইতে বিরত হইতে হইত। সম্পূর্ণরূপ আন্তরিক ইচ্ছার সহিতই আমি যে সেই সকল কার্য্য হইতে বিরত হইয়াছিলাম, তাহা নহে। কারণ, এখন আর আমার সে বয়স ছিল না, সে চেহারা ছিল না, সে দিনও ছিল না, সে সমস্তই ক্রমে ক্রমে আমাকে পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছিল। যাঁহারা আমাকে প্রণয়ের চক্ষে দেখিতেন, এখন আর তাঁহারা আমাকে সে চক্ষে দেখিতেন না। যাঁহারা আমাকে পূর্ব্বে অন্তরের সহিত যত্ন করিতেন, এখন আর তাঁহারা আমাকে সেরূপ ভাবে যত্ন করিতেন না। আমার নিমিত্ত যাঁহারা জলের মত অর্থ ব্যয় করিয়া আসিয়াছিলেন, এখন তাঁহারা আমার জন্য একটী মাত্র টাকা ব্যয় করিতে কুণ্ঠিত হইতেন। যাঁহারা আমা কর্ত্তৃক অপমানিত এবং তাড়িত হইয়াও রাত্রিদিন আমার গৃহে পড়িয়া থাকিতেন, এখন সাধ্যসাধনা করিলেও, তাঁহারা আর আমার বাটীর নিকট দিয়া গমন করিতেন না। এখন আমার আশা ভরসার মধ্যে কেবলমাত্র কালীবাবু; সম্পদ বিপদের সময়ও