বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

গহনাগুলিও বন্ধক পড়িতে লাগিল। এই সময় কালীবাবু পুনরায় তাঁহার পূর্ব্বের সেই দালালী কার্য্যে প্রবৃত্ত হইলেন। কিন্তু সময়ের স্রোত একবার চলিয়া গেলে, সেই স্রোত পুনরায় আর ফিরে না। এতদিবসের পরে কালীবাবু তাঁহার সেই কার্য্যে প্রবৃত্ত হইলেন সত্য, কিন্তু আর কিছুই করিয়া উঠিতে পারিলেন না। তখন তিনি আর কোনরূপ উপায় না দেখিয়া, জুয়াচুরির নানা উপায় বাহির করলেন, এবং সেই উপায় অবলম্বনেই আমাদিগের সমস্ত ব্যয় নির্ব্বাহ হইতে লাগিল। এই কার্য্যের নিমিত্ত তাঁহার একজন সহকারীর প্রয়োজন হইল; তিনি তাহাও পাইলেন। সে আর কেহই নহে, এই দুরাচারিণী, মহাপাপকারিণী, মায়াবিনী রাক্ষসীই তাঁহার সহায় হইল। তাঁহার ইচ্ছামত আমি সকল দুষ্কার্য্যই করিতে প্রবৃত্ত হইলাম।

 “কালীবাবু তখন নব্য ইয়ার-ছোকরার দলে মিশিলেন; তাহাদিগকে জুটাইয়া আমার বাটীতে আনিতে লাগিলেন। আমার বাটীতে সেই সময় একটী ছোটখাট মদ্যালয় স্থাপিত হইল। যিনি পিতামাতাতে লুকাইয়া পাপের প্রথম দ্বারে উঠিতে ইচ্ছা করিতেন, কালীবাবু, তাহাকেই আমার বাড়ীতে লইয়া আসিতেন। অধিক রাত্রিতে যাঁহার মদ্যপানের লালসা বলবতী হইত, তিনিই আমার বাড়ীতে পদার্পণ করিতেন। কিন্তু একদিবস যিনি অসিতেন, পরদিবস আর তাঁহাকে দেখিতে পাইতাম না। তিনি যতদিবস বাঁচিতেন, আমার বাটীর নিকটবর্ত্তী আর হইতেন না; অধিকন্তু, তাঁহার বন্ধুবান্ধবকে আমার চরিত্রের কথা বলিয়া সতর্ক করিয়া দিতেন। কেন যে তাঁহারা আমার বাড়ীতে আসিতেন না, এবং অপরকে আসিতে বারণ করিতেন, তাহার কারণ বলিতেছি, শুনুন।