পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

অন্তিম সময়ে দুইটী সবিশেষ কার্য্যবশতঃ আজ আমি তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছি। প্রথমতঃ, তুমি সবিশেষরূপে অবগত আছ যে, তোমার এই ভয়ানক দণ্ডের মূলীভূত কারণ সকলের অন্যতম কারণই আমি। কারণ, যেরূপ ভাবে আমি এই মোকদ্দমার অনুসন্ধান করিয়াছিলাম, সেইরূপ উপায় অবলম্বন করিয়া, যদি আমি এই অনুসন্ধানে লিপ্ত না হইতাম, বা যেরূপ ভাবে আমি তোমাকে প্রতারিত করিয়াছিলাম, সেইরূপ ভাবে তুমি যদি আমা কর্ত্তৃক প্রতারিত না হইতে, তাহা হইলে এই ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কথা সকল বোধ হয়, কিছুই প্রকাশিত হইয়া পড়িত না; সুতরাং তুমিও এই ভয়ানক দণ্ডে দণ্ডিত হইতে না। কাজেই তোমার এই চরমদণ্ডের মূলীভূত কারণ সকলের অন্যতম কারণই আমি। ইহা আমি নিজ মনে উত্তমরূপে অবগত হইয়া, তোমার জীবনের এই শেষ সময়ে তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিবার মানসে আজ আমি তোমার নিকট উপনীত হইয়াছি। আশা করি, যদি ইহাতে আমার কোনরূপ দোষ থাকে, তাহা হইলে তুমি আমাকে ক্ষমা করিবে। কারণ, নিজ ইচ্ছার বশবর্ত্তী বা কোনরূপ লোভ পরতন্ত্র হইয়া আমি এরূপ জঘন্য কার্য্যে প্রবৃত্ত হই নাই, তাহা তুমি বেশ অবগত আছ। কেবলমাত্র আমার কর্ত্তব্যকর্ম্মের বশবর্ত্তী হইয়াই, আমি তোমার এইরূপ বীভৎস পরিণামের মূলীভূত কারণ সমূহের অন্যতম কারণ হইয়াছি।

 “ত্রৈলোক্য! এখন তুমি বেশ বুঝিতে পারিতেছ যে, তোমার মৃত্যু অতি নিকটবর্ত্তী। বোধ হয়, এক সপ্তাহের মধ্যেই রাজআদেশে তোমার প্রাণ বায়ু বিরামলাভ করিবে। আমার বিশ্বাস, এই অবস্থায় তুমি আর কোনরূপ মিথ্যা কথা বলিয়া তোমার কলুষিত আত্মাকে আরও কলুষিত করিবে না।