বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাহাড়ে মেয়ে।

 “আমি যে দুইটী কার্য্যের নিমিত্ত আজ তোমার নিকট আগমন করিয়াছি, তাহার প্রথম কার্য্যের বিষয় তোমার নিকট বিবৃত করিলাম। দ্বিতীয় কার্য্যটী যে কি, তাহাই এখন তোমাকে শুনিতে হইবে। কেবল শ্রবণ নহে,—আজ তোমাকে আমার প্রার্থনা পূর্ণ করিতে হইবে। অদ্য আমি তোমার নিকট যে প্রার্থনা করতে আসিয়াছি, তাহাই তোমার নিকট আমার শেষ প্রার্থনা। আশা করি, আমার এই শেষ প্রার্থনা পূর্ণ করিতে তুমি কোনরূপেই কুষ্ঠিত হইবে না; বরং আমার প্রার্থিত বিষয় বর্ণন করিয়া, অপর অনেকের উৎকণ্ঠা দূর করিবে। আমার সেই শেষ প্রার্থনা আর কিছুই নহে, কেবল তোমার জীবনের মূল স্থূল ঘটনাগুলি জানিবার ইচ্ছা মাত্র। আমি জানি, তোমার জীবনের অনেক অংশ ভয়ানক বিভীষিকাময় কার্য্যে পরিপূর্ণ। যে সকল মহাপাপের ফল তুমি আজ প্রাপ্ত হইয়াছ, তাহার অনেক বিষয় আমি অবগত আছি; কিন্তু সমস্ত বিষয় সম্পূর্ণরূপ জানিব বলিয়াই, আজ তোমার নিকট উপস্থিত হইয়াছি। এখন তুমি আমার প্রার্থনা পূর্ণ করিয়া একদিকে আমার কৌতূহল পরিতৃপ্ত কর,—অপর দিকে স্ত্রীলোকমাত্রকেই জানাইয়া দাও যে, পাপ-পথে পদার্পণ করিলে, তাহার ভবিষ্যৎ ফল কি হইতে পারে।”

 আমার কথা শ্রবণ করিয়া ত্রৈলোক্য কহিল, “মহাশয়। আমি আমার জীবনের যৌবনাবস্থা হইতে আরম্ভ করিয়া, দিন দিন যেরূপ রাশি রাশি ভয়ানক পাপ উপার্জ্জন করিয়াছি, তাহার উপযুক্ত দণ্ড আমি প্রাপ্ত হই নাই! এখন আমি জানিতে পারিলাম, ইংরাজ রাজত্বে ভয়ানক পাপীর উপযুক্ত দণ্ড বিধান হয় না। ইংরাজ আইনে মহাপাপীর মহাদণ্ডের বিধান নাই!