পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শশী একটু হাসিল, সে কথা শুনে আর কি হবে ? সরস্বতী অপেরাক্স ঠিকানাটা বলতে পারেন ? সরস্বত্নী অপেরা ? নামও শুনিনি । এইখানে তবে ইতি কুমুদকে খোজ করার ? শশী চলিয়া আসিতেছিল, অধিকাৰী বলিল, কুমুদের সঙ্গে আপনার দেখা হবে কি ? শশী বলিল, তা বলতে পারি না । হওয়া সম্ভব । অধিকারী বলিল, দেখা হলে একবার জিজ্ঞেস করবেন তো, এই কি ভদৱলোকের ছেলের কাজ ? আচ্ছা থাক, ওসব কিছু জিজ্ঞেস করে কাজে নেই, বাবুর আবার অপমানজ্ঞানটি টনটনে ! বলবেন যে অধৱ মলিক ও দুশোচারশো টাকার জন্য কোয়ার করে না । পালাবার তোর কি দরকার ছিল রে বাপু, আঁ্যা ? চাইলে ও কটা টাকা তোকে আর আমি” দিতাম না, -তিন বছর তুই আমার দলে আছিল, ছেলের মতো তোর পরে মায়া বসেছে ! গলাটা অধিকারীর ধরিয়া আসিল, কে জানে শ্লেষ্মায় কি মমতায় । চোখ পিটপিট করিয়া বলিল, আমার ছেলেপিলে নেই, জানেন ? একটা মেয়ে ছিল, বাপ বটে। আমি, তবু বলি দেখতে-শুনতে মেয়ের আমার তুলন্ধ ছিল না। মশায়-রঙ যাকে বলে - আসল গৌর, তাই। কুমুদের সঙ্গে दिट्य KWー ভেবেছিলাম, তা ছোড়ার কি আর বিয়ে-টিয়ের মতলব আছে-একদম পাষণ্ড । তাই না কেষ্টনগরের এক ডাকাতের হাতে মেয়ে দিতে হল, যন্ত্রণ দিয়ে মেয়েটাকে তারা মেরে ফেললে । সেই থেকে কি যে হল অ্যামার, সংসারে আর মন নেই-দল একটা করেছি, কেউ ডাকলে-ডুকলে পালা গেয়ে আসি-কিছু ভাল লাগে না মশায় ৷ আছি শতেক জ্বালায় আধমরা হয়ে, কুমুদ ছোড়া কিনা ডুবিয়ে গেল আমাকেই,-ছোড়ার দেহে একইফশটা মায়াদিয়া নেই। আমি হলে তো পারতাম না বাপু একটা শোকাতুর মানুষের ঘাড় ভেঙে পালাতে-পারতাম না । ছোড়াটা কি ! বিস্ময়ে ও আবেগে অধিকারী শুধু মাথাই নীড়িল খানিকক্ষণ । তারপর আরও বেশি অস্তরঙ্গ হইয়া বলিল, আপনাকে খুলেই বলি দাদা, কুমুদ গিয়ে থেকে দলটা কানা হয়ে গেছে। খাসা পার্ট বলত, বিশ বছর আছি। এ লাইনে, আমনটি আর দেখিনি ! দেখা হলে বলবেন, টাকা গেছে যাক, আম্বক, কাজ করুক, পুরোনো কাহিন্দী ঘাটবার পাত্ৰ অধর মল্পিক নয় । দশ-বিশ টাকা মাইনে বেশি চায়, আমি কি বলেছি দেব না ? ছোড়াটা কি ! SS)