পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিসের অভাবনা ? নিজের সৌভাগ্যে মতি পুলকিত হুইয়া থাকে। গায়ের কোন মেয়ে তােদর মতো এমন ভাগ্যবতী ? মনের মতো বরের সঙ্গে তো বিবাহ হয়ই না, শ্বশুর বাড়ি গিয়া প্ৰথমে ঘোমটা দিয়া ঘরের কোণে বসিয়া থাকে, তারপর বাসন মাজে, ঘর লেপে, রান্না করে আর গলাগলি খায় । কত অভয়, কত ভাবনা, কত তারা পরাধীন। আর তার নিজের পছন্দ করা বর, বিবাহের পরেই এমন ক্ষুৰ্তি করিয়া বেড়ানো, সব বিষয়ে স্বাধীনতা । হোটেলের ঘরখানা মতির পছন্দই হইল । রাস্তার দিকে দুটি জানালা আছে, কুকিলে দুদিকে অনেক দূর অবধি দেখা যায়। ঠিক সামনে একটা ছোট গলি সোজা। গিয়া পড়িয়াছে ওদিকের বড় রাস্তায় । সেখানে ট্রাম চলে ; কুমুদের সাহায্যে বিছানা পুতিয়া মতি ঘর গুছাইয়া ফেলিল ! হোটেলের চাকরিদের দিয়া দুটি একটি দরকারী জিনিস আনানো হইল । তারপর মতি সাবান মাখিয়া স্বান করিয়া আসিল, স্মানের ঘরের বন্ধ দরজার সামনে কুমুদের প্রহরী হইয়া দাড়াইয়া থাকা কি মজার ব্যাপার। হোটেলের বুড়ো উড়িয়া বামুন,-বেঁটে লিকলিকে বাদামী রঙের মানুষ সে, কিন্তু কথায় কাজে চটপটে-ঘরে ভাত : দিয়া গেল। নিজের থালায় ভাতের পরিমাণ দেখিয়া মতি বলিল, মাগো, কত ভাত দিয়েছে দ্যাখে আমাকে । আমার মত সাতটার কুলিয়ে যাবে যে ! . মেসে হোটেলে এমনি দেয় । নষ্ট হবে তো ? ডেকে বল না তুলে নিয়ে যাক ? হোক না নষ্ট, আমাদের কি ? তবু মতির মন খুতখুতে করিতে লাগিল। আহা, ভাত যে লক্ষ্মী, ভাত কি নষ্ট করতে আছে। থাইতে খাইতে আবার সে আপসোস করিল। কুমুদ বলিল, তুমি তো আচ্ছা মেয়ে দেখছি। একটা তুচ্ছ কথা নিয়ে ধ্রুত ভাবিছ ? ভাত নষ্ট হবে তাও হোটেলের ভাত, এ আবার মানুষের মনে আসে? খাওয়া-দাওয়ার পর সিগারেট টানিতে টানিতে কুমুদ ঘুমাইয়া পড়িল । জলন্ত সিগারেটটা তার প্রসারিত হাত হইতে মেঝেতে খসিয়া পঢ়িলে মতি সেটা কুড়াইয়া নিভাইয়া তুলিয়া রাখিল। অর্ধেকও পোড়ে নাই সিগারেটটা, ঘুম হাইলৈ উঠিয়া কুমুদ আবার খাইতে পরিবে। তারপর গাড়ির কষ্টে মতিরও ঘুম আীপ->~ব্লাগিল। চৌকিতে কুমুদ এমনভাবে গা এলাইয়া vyštus cz. পাশে জায়গা স্থ২-একক,-এনে- ri-, -i- তো নিয়ম, না ? নিয়ম বজায় রাখিতে না পারিস্ক মতি দুঃখিত মনে মেঝেতে একটা কম্বল বিছাইয়া শুইয়া পড়িল । তিনটার\শ্বময় ঘুম ভাঙ্গিল কুমুদের । S R