পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা শহরে, দেশে বিদেশে কোথাও শশী যার মতে রূপসী দেখে নাই শুধু রূপের জন্যই হয়তো যে মিথ্যা কলঙ্ক কিনিয়াছে, এ কি রোগ থারিয়াছে তাহাকে ? শশীর ভাক শুনিয়া যামিনী কবিরাজের বেী চোখ মেলিয়া তাকাইয়া কঁদিতে কঁাদিতে বলিল, তুমি এত দিনে এসেছি শশী ?-অামি যে মরতে বসেছি শশী, কি অসুখ করেছে কিছু জানি না, জ্বরে অচৈতন্য হয়ে থাকি, গায়ের ব্যথা সইতে পারি না আমি খবর পাইনি সেনদিদি । কাকে দিয়ে খবর পাঠাব, কেউ কি আসে আমার কাছে ! সেনদিদি চোখ মেলিতে পারে না, চোখের কোণ দিয়া জল গাড়াইয়া পড়ে । শশী বিছানায় বসে, সেনদিদির গায়ের তাপ পরীক্ষা করে, কি করিবে ভাবিয়া পায় না । যামিনী অসুখের কথা গোপন করিবার চেষ্টা করিয়াছিল, এ পৰ্যন্ত চিকিৎসারও হয়তো কোন ব্যবস্থা হয় নাই । আজকাল তাহার কি হইয়াছিল, সেনদিদির খবর লইত না কেন ? এই মলিন দুৰ্গন্ধ চাদরে আজ কত দিন না জানি তাহার সেনদিদি বিনা চিকিৎসায় পটিয়া আছে, এতটুকু সেবা করিবারও কেহ থাকে নাই। শশী কিছু বুঝিতে পারে না। যে রূপের জন্য পৃথিবীর লোক উন্মাদ, স্ত্রীর ষে সৌন্দৰ্য মানুষ তপশু করিয়া পায় না, যামিনী তাই পাইয়াছে। বুড়া বয়সে সে তো স্ত্রীর দাস হইয়া থাকিবো! কি জন্য তাহার এই বিকৃত নিষ্ঠুর অবহেলা ? কে জানে। হয়তো সীতা আর হেলেন আর ক্লিওপেট্রার মতো যার অসাধারণ রূপ থাকে। তাকে ঘিরিয়া খাপছাড়া কাণ্ডই ঘাটিতে থাকে জগতে খানিক পরে যামিনী ঘৱে আসিল, মুখ ভার করিয়া বলিল, এখৰো তুরি বসে আছ শশী ? আমি ভাবলাম তুমি বুঝি চলে গেছ । শশী বলিল, ঠাকুর্দা, বাইরে আসুন দিকি একবার ! বাহিরে গিয়া বলিঙ্গ সেনদিদির অসুখ কি আপনি ধরতে পারেননি। ঠাকুর্দা ? যামিনী করিরাজ বলিল, হাসির কথা বললে বটে। শশী, চল্লিশ বছ। কবরোজি করছি, তিনটে জেলায় যামিনী কবরেজের নাম জানে নট এম লোক নেই,"আমায় তুমি শুধোচ্ছে রোগ ধরতে পারিনি ? এক-নজর তাকা রোগ নিৰ্ণয় হয় । ওঁমুর হয়েছে ম্যালেরিয়া । ম্যালেরিয়া নয়, ঠাকুরদা, বসন্ত । শশী বলিল । ই, বসন্ত । শরৎকালে বসন্ত 1-বলিল যামিনী কবিরাজ । NOVC) t)