পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শশী হাসিয়া বলিল, তুইও তো বলিস মতি। পরানের বে। ' হয়তো তোর কাছ থেকেই বলতে শিখেছে । মতির মুখ শুকাইয়া গেল । আমি আপনার নামে বলি ! আমি যদি আপনার নামে কিছু বলে থাকি আমার যেন ওলাউঠা হয় । হয়-হয়-হয়, তিন সত্যি করলাম, ভগবান a শশী অবাক হইয়া বলিল, তুই তো আচ্ছা রে মতি ! সকাল বেলা ফুল তুলতে তুলতে ওলাউঠার নাম করছিস ! মতি এবার রাগ করিয়া বলিল, আমার যেন হয় । রোদ উঠিলে মতি বাড়ি গেল। শশী ভাবিল এমন গেয়ে স্বভাব, দেখতে । র্তো গেয়ে নয় ? ? k. আর মতি ভাবিল, শেষের দিকে ছোটবাবু আমাকে কি করে দেখছিল ? আমাকে দেখতে দেখতে কি ভাবছিল ছোটবাবু ? হারু ঘোষের বাড়ির সামনে বেগুন গাছগুলি এমন খুব সতেজ। কয়েকটা পাছে কচি কচি বেগুন ও ধরিয়াছে । বড় ঘরের পাশ দিয়া পিছনের মাঠে । তাকাইলে অনেক দূরে কুয়াশা দেখা যায়। দূরত্বই যেন ধোয়াটে হইয়া আছে, কুয়াশা মিছে কি?” মতি তৃপ্তি বোধ করে । সকাল বেলার সোনালী রোদে তাহার চোখের সীমানার গ্রামখানি দেখিতে অপূৰ্ব হইয়া উঠিয়াছে বলিয়া নয় । প্ৰকৃতিকে, তাদের এই গ্রামের প্রকৃতিকে, মতি এত বেশি করিয়া চেনে যে আকাশের রামধনু ছাড়া তাহার চোখ তাহার মন কোথাও ব্ৰঙ খুজিয়া পায় না । নাকের সামনে কচি কিশলয়ের মৃদু হিন্দোল কোন, কঁচু মনুকে দোল দেয় কে জানে, মতির মনকে দেয় না । সর্বাঙ্গের শুভ্ৰাতায় তালগাছের রহস্যময় ছায়া মাখিয়া মাখিয়া তালপুকুরের গভীর কালো জলে ইস সাতার দেয়, তাদের গায়ে ঠেকিয়া লাল ও সাদা শাপলাগুলি জ্বলে ডুবিয়া ভাসিয়া উঠে, চারিদিকের তীর ভরিয়া কলমী শাকের ফুলগুলি बांडोंटन যেন কেমন করিতে থাকে ! অ্যাকাশে ভাসে উজ্জ্বল সাদা মেঘ। আর বন্য জাপোতের ঝাক । শালিখা পাখি উড়িবার সময় হঠাৎ শিশব দেয়। অল্প দুরে কাতোঁরা পাখির পাঠশালা বসে। বাতাসে থাকে। কত ফুল, কত মাটি, কত aquari ? Vi মতি কিছু দেখে না, কিছু শোনে না, কিছু শোকে না । তালপুকুরের নির্জনতাকে সে শুধু ভোগ করে গায়ে জড়ানো আঁচলটি কোমরে বাধিয়া । Wr