পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 এবার কার্তিক মাসে পূজা । সেনদিদির সর্বাঙ্গে ব্ৰণগুলি পাকিয়া উঠিতে উঠিতে গ্রামের পূজার উৎসব শুরু হইয়া গেল। উৎসব সহজ নয়, গ্রামের জমিদার শীতলবাবুর বাড়ি তিন দিন যাত্রা, পুতুলনাচ, বাজি পোড়ানো সাতগার মেলা -পূজা তো আছেই। গ্রামবাসীর ঝিমানো জীবন-প্রবাহে হঠাৎ প্ৰবল উত্তেজনার সঞ্চার হইয়াছে, কেবল শশী এবার সেনদিদিকে লইয়া বড় ব্যস্ত । যাত্রা আরম্ভ হয়। সপ্তমীর রাত্রে । যাত্রার দল তার আগেই গ্ৰামে হাজির হুইয়া যায়। বায়না দিবার সময় শীতলবাবু অধিকারীকে বলিয়া দেন, দল নিয়ে দু-একদিন আগেই আসবে বাপু, এক রাত্রি বেশ করে ঘুমিয়ে রাস্তার কষ্ট দুর করে অভিনয় করবে । এবার যেজ্ঞ দলকে বায়না দেওয়া হইয়াছিল সে-দল এ অঞ্চলের নয়। বিনোদিনী অপেরা পাটির আদি আস্তানা খাস কলিকাতায় । বাজিতপুরের মথুৱা সাহার ব্যবসা উপলক্ষে কলিকাতা যাওয়া-আসা আছে। किङ्कनि আগে ছেলের বিবাহে এই দলটি সে কলিকাতা হইতে ভাড়া করিয়া আনিয়াছিল। লোকমুখে দলের প্রশংসা শুনিয়া শীতলীবাবু সেই সময় বায়না দিয়া রাখিয়াছিলেন । কাল বিকালে বিনোদিনী অপেরা পাটি আসিয়া পৌছিয়াছে। মন্ত দল, ” সঙ্গে অনেকগুলি বড় বড় কাঠের বাক্স । দেখিয়া গ্রামের লোক খুশী হইয়াছে। দলের অধিকারী বি-এ ফেল, তবে দলে তাহার দু জন বি-এ পাশ অভিনেতা আছে শোনা অবধি সকলে উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছে। থেটার, আঁ্যা ? উহু, যাত্ৰা । অপেরা-পাটি নাম যে ? তাই ভাল । যাত্ৰাই ভাল । সাতগার কাছারি-বাড়িটা সাফ করিয়া যাত্রাওয়ালাদের থাকিতে দেওয়া” “হুইয়াছিল। দলের সকলের মশারি নাই, কুমুদের আছে। রাত্রে তার ঘুম ; মন্দ হয় নাই•। সকালে উঠিয়া সে শশীর সঙ্গে দেখা করিতে আসিল । শশী অবাক হইয়া বলিল, তুই ! কুমুদ ? কুমুদ হাসিয়া বলিল, না রে, আমি প্ৰবীর । . S