পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোন জার্মািফক্বাবু কৃষ্ট, “এজো । এ খবর শশী জানিত না । তাদের কোন সংবাদ না দিয়া নন্দলাল গায়ে আসিতেছে ইহাতে আশ্চৰ্যও সে হুইল না। বিবাহের পরেই নন্দলাল শগুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক তুলিয়া দিয়াছে। কখনো চিঠি লেখে না, চিঠির জবাব ? দেয় না.। বিন্দু প্ৰথম প্রথম চিঠি লিখিত, স্বামীর আদেশের বিরুদ্ধে লুকাইয়া । নন্দলাল টের পাইবার পর বাপের বাড়ির সঙ্গে চিঠি লেখার সম্পৰ্কটুকুও তাহাকে তুলিয়া দিতে হইয়াছে। একবার সে যে দু-চার দিনের জন্য বাপের বাড়ি আসিয়াছিল তাও স্বামীকে লুকাইয়া, ব্যবসা উপলক্ষে নন্দলাল দিন পনের বোম্বে গিয়াছিল। সেই সময় । এমন ব্যাপার বেশি দিন গোপন থাকিবার নয়। বোম্বে হইতে ফিরিয়া একদিন নন্দলাল স্ত্রীকে বলিয়াছিল, *গাওদিয়া গিয়েছিলে ? বিন্দু ভয়ে কঁপিয়া একটু হাসিয়া ব্যাপারটা উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিয়া বলিয়াছিল, একদিনের তরে গিয়েছিলাম, মোটে একদিন । বাবার যা অসুখের কথা শুনলাম !--রাগ করেছি ? রাগ করেছি ?—ভ্যাঞ্জাইয়া,-ছোটলোকের বাচ্চা । গছাইয়া-দেওয়া বেী, প্রাণভয়ে-গ্ৰহণ-করা বৌ, লেখাপড়া-নাচ-গান-কিছু না-জানা বেী, জীবনের অপুরণীয় ক্ষতি । বিন্দুকে নন্দলাল ত্যাগ করে নাই কেন, কে বলিবে ! হয়তো কর্তব্যজ্ঞান, হয়তো খেয়াল, হয়তো নির্বিবাদে। ওকে লইয়া যা খুশি তাই করা যায় বলিয়া নন্দলালের কাছে বিন্দুর এক ধরনের দাম আছে,-কে বলিবে বিন্দুকে7 নন্দলাল আতি গহনা-কাপড় দেয় কেন, সে আর এক রহস্য । বিন্দু কি ধারকরা গহনা গায়ে দিয়া ব্লাপের বাড়ি আসিয়াছিল ? যাহা পায় নাই তাহাঁই পাইয়াছে এই অভিনয়টুকু করিয়া যাওয়ার জন্য ? কে বলিবে ! জীবনের অজ্ঞাত ব্ৰহস্য গাওদিয়ার বিন্দুকে গ্ৰাস করিয়াছে, কলিকাতার অনামী রহস্য । কলিকাতায় থাকিয়া পড়িবার সময়ও শশী যাহা ভেদ করতে পারে নাই । নন্দলাল একপ্রকার অপমানই কারিত, কিন্তু শশী যাইতে ছাড়িত না । ভাইফোটার দিন ক-বার বিন্দু তাহাকে ফোটা দিয়াছে। বিন্দুর গা-ভর গহনা সে দেখিতে পাইত না ? না ।” অন্তঃপুরের দৈনন্দিন সাধাসিবে জীবনে “গহনার বোঝা বহিয়া বেড়াইতে বিন্দু ভালবালে না,-চোখের আবিষ্কার কানো শোনো এই কৈফিয়র্ত শশীর কাছে মিথ্যা হইল” “ইহঁতৰ্প শশী ভাবিত, বিন্দু। তবে সুখেই আছে ? ? ఆశా ":". বুঝিােত না । বাহিরের লোকের