পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
পুনশ্চ

রাত্রি এগারোটার সময় শালবনে
ময়ূরাক্ষী নদীর ধারে।

বাড়ির পিছন দিকটাতে
শাক-সবজির ক্ষেত।
বিঘে দুয়েক জমিতে হয় ধান।
আর আছে আম কাঁঠালের বাগান
আসশেওড়ার বেড়া দেওয়া।
সকালবেলায় আমার প্রতিবেশিনী
গুন গুন গাইতে গাইতে মাখন তোলে দই থেকে,
তার স্বামী যায় দেখতে ক্ষেতের কাজ
লাল টাট্টু ঘোড়ায় চড়ে।
নদীর ওপারে রাস্তা,
রাস্তা ছাড়িয়ে ঘন বন,—
সেদিক থেকে শোনা যায় সাঁওতালের বাঁশি,
আর শীতকালে সেখানে বেদেরা করে বাসা
ময়ূরাক্ষী নদীর ধারে।


এই পর্য্যন্ত।
এ বাসা আমার হয়নি বাঁধা, হবেও না।
ময়ুরাক্ষী নদী দেখিও নি কোনোদিন।—
ওর নামটা শুনিনে কান দিয়ে,
নামটা দেখি-চোখের উপরে-
মনে হয় যেন ঘন নীল মায়ার অঞ্জন
লাগে চোখের পাতায়।