পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
পুনশ্চ

ছেলেটার খেয়াল গেল ঐখানে ডুব দিতে,
ঐ সবুজ স্বচ্ছ জল,
সাপের চিকন দেহের মতো।
কী আছে দেখিই না, সব তাতে এই তার লোভ।
দিল ডুব, দামে গেল জড়িয়ে-
চেঁচিয়ে উঠে খাবি খেয়ে তলিয়ে গেল কোথায়।
ডাঙায় রাখাল চরাচ্ছিল গোরু,
জেলেদের ডিঙি নিয়ে টানাটানি করে তুললে তাকে,
তখন সে নিঃসাড়।
তারপরে অনেকদিন ধরে মনে পড়েচে
চোখে কী করে শর্ষেফুল দেখে,
আঁধার হয়ে আসে,
যে মাকে কচিবেলায় হারিয়েচে
তার ছবি জাগে মনে,
জ্ঞান যায় মিলিয়ে।
ভারি মজা,
কী করে মরে সেই মস্ত কথাটা।
সাথীকে লোভ দেখিয়ে বলে,—
“একবার দেখনা ডুবে, কোমরে দড়ি বোঁধে,
আবার তুলব টেনে।”
ভারী ইচ্ছা করে জানতে ওর কেমন লাগে।
সাথী রাজি হয় না,
ও রেগে বলে, “ভীতু, ভীতু, ভীতু কোথাকার।”

বক্সিদের ফলের বাগান, সেখানে লুকিয়ে যায় জন্তুর মতো।
মার খেয়েচে বিস্তর, জাম খেয়েচে আরো অনেক বেশি।