পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
পুনশ্চ

আবার বললুম মনে মনে,
ভাগ্যটা ঘোলাজলের ডোবা,—
বীরত্বের স্মৃতি মনের মধ্যে কেবলি আজ আওয়াজ করচে,
ঠাট্টার মতো।
ঠিক করলুম ভুল শোধরাতে হবে।


খবর পেয়েচি গরমের ছুটিতে ওরা যায় দাৰ্জ্জিলিঙে।
সে-বার আমারও হাওয়া বদলাবার জরুরী দরকার।
ওদের ছোট্ট বাসা, নাম দিয়েচে মতিয়া,—
রাস্তা থেকে একটু নেমে এক কোণে,
গাছের আড়ালে,
সামনে বরফের পাহাড়।
শোনা গেল আসবে না এবার।
ফিরব মনে করচি এমন সময়ে আমার এক ভক্তের সঙ্গে দেখা,
মোহন লাল, —
রোগা মানুষটি, লম্বা, চোখে চষমা,
দুর্ব্বল পাকযন্ত্র দাৰ্জ্জিলিঙের হাওয়ায় একটু উৎসাহ পায়।
সে বললে, “তনুকা আমার বোন,
কিছুতে ছাড়বে না, তোমার সঙ্গে দেখা না করে।”
মেয়েটি ছায়ার মতো,
দেহ যতটুকু না হলে নয় ততটুকু,—
যতটা পড়াশোনায় ঝোঁক, আহারে ততটা নয়।
ফুটবলের সর্দারের পরে তাই এত অদ্ভুত ভক্তি,—
মনে করলে, আলাপ করতে এসেচি সে আমার দুর্লভ দয়া।
হায়রে ভাগ্যের খেল॥