পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুনশ্চ
৭৫

একদিন দেখি, নদীর ধারে বালির উপর চড়িভাতি করচে এরা।
ইচ্ছে হোলো গিয়ে বলি, আমাকে দরকার কি নেই কিছুতেই।
আমি পারি জল তুলে আনতে নদী থেকে-
পারি বন থেকে কাঠ আনতে কেটে,
আর তা ছাড়া কাছাকাছি জঙ্গলের মধ্যে
একটা ভদ্রগোছের ভালুকও কি মেলে না।


দেখলেম দলের মধ্যে একজন যুবক,—
শর্ট-পরা, গায়ে রেশমের বিলিতি জামা,—
কমলার পাশে পা ছড়িয়ে
হাভানা চুরট খাচ্চে।
আর কমলা অন্যমনে টুকরো টুকরো করচে
একটা শ্বেতজবার পাপড়ি।
পাশে পড়ে আছে
বিলিতি মাসিক পত্র।


মুহূর্ত্তে বুঝলেম এই সাঁওতাল পরগণার নির্জ্জন কোণে
আমি অসহ্য অতিরিক্ত, – ধরবে না কোথাও।
তখনি চলে যেতেম, কিন্তু বাকি আছে একটি কাজ।
আর দিন কয়েকেই ক্যামেলিয়া ফুটবে,
পাঠিয়ে দিয়ে তবে ছুটি।
সমস্তদিন বন্দুক ঘাড়ে শিকারে ফিরি বনে জঙ্গলে,
সন্ধ্যার আগে ফিরে এসে টবে দিই জল
আর দেখি কুঁড়ি এগোলো কত দূর।