পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

বাঁচিয়া থাকিলে কন্যালো পুন হবে দেখা।
মিলন হইবে যদি অদিষ্টির লেখা॥৩৬২
বনের পথে ঘোড়া গুটা বান্ধা যে আছিল।
তাহার উপরে ত কুমার শোয়ার হইল॥৩৬৪

যোগল চরণে কন্যা, হায় ভালা, পন্নাম জানায়।
“সাক্ষী হইও চান্দ সূরুজ বন বিরক লতা।
তোমরা ত শুন্যাছ বন্ধের আইজকার কথা॥৩৬৭
সাক্ষী হইও পশু পক্ষী তোমরা সকলে।”
এহি কথা কইয়া কন্যা ভাসে আঁখি জলে॥৩৬৯

আইজের নিশি দুখের নিশি ভালা দুঃখের মিলন।
কান্দিয়া জানায় কন্যা নিজ আকিঞ্চন॥৩৭১
“তিরভুবনে আপন বলতে আর কেহ নাই।
তোমার চরণে বন্ধু পাই যেন ঠাঁই॥”৩৭৩

এতেক না বলিয়া চাম্পাবতি কোন কাম করিল।
যোগল চরণে কন্যা মাথা নুয়াইল॥৩৭৫
কন্যারে ধরিয়া কুমার মুছায় আঁখিতারা।
আপনি মুছিয়া লইল দুই নয়নের ধারা॥৩৭৭
“চান্দ সুরুজ সাক্ষী বন-বিরক-লতা।
এক সাক্ষী বনের পশু আর ধাতাকাতা[১]৩৭৯
নদী নালা সাক্ষী দেখ আর সে পরনে।
আইজ় হইতে প্রিয়া মোর জীবন মরনে॥”৩৮১
আলিঙ্গন দিয়া কুমার ভালা ঘোড়া না ছুটাইল।
পুষ্পের মুখে চুম্বা দিয়া ভালা ভমরা উড়িল॥৩৮৩


  1. ধাতাকাতা=ধাতাকর্ত্তা, সকলের উপর যে বিধাতা কর্ত্তা। ‘ধাতাকাতা’ শব্দটি প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের অনেক স্থলে পাওয়া গিয়াছে।