পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বগুলার বারমাসী
২১৭

গন্ধের তৈল সারি সারি লো কন্যা তোমার লাগিয়া।
সেহিত তৈল দাসীগণ দিব অঙ্গেত মাখিয়া॥
চাচর চিক্কণ কেশে বাইন্ধা দিব বেণী।
যতনে থাকিবা সুখে অইয়া রাজরাণী॥
আজু যে ফুটে সোণার ফুল কাইল অইব[১] বাসি।
সুবন্ন অধরে কন্যা না থাকির হাসি॥
নারীর যৈবন লো কন্যা জোয়ারের পানি।
একবার লাগিলে ভাটি বেরথা[২] টানাটানি॥”

“শুন শুন আলো দূতী কইয়া বুঝাই তোরে।
মোর পরাণ পতি নাই সে দেখ ঘরে॥
বরত[৩] কইরাছি আমি শুন দিয়া মন।
রাজপুত্রে দিও আমার এই সে লিখন॥
বুঝাইয়া শুনাইয়া কইও আমার যত কথা।
বুঝাইয়া শুনাইয়া কইও দুখের বারতা॥
বড় দুঃখু দেয় মোরে শাশুড়ী ননদী।
তাদের দুঃখের দায়ে নিরালায় কাঁদি॥
ধরিতে না পারি যৈবন হইল বিষম কাল।
শাশুড়ী ননদী ঘরে হইল জঞ্জাল॥
চিত্তে ক্ষেমা দিয়ায়ে দূতী বচ্ছর গুয়ায়।
এই কথা বুঝাইয়া বইল রাজার ছাল্যায়॥
এক বচ্ছর ব্রত মোর ভূমিত শয়ন।
পর পুরুষের মুখ না করি দর্শন॥
খাট পালঙ্ক ছাড়ছি জমিনে বিছানা।
সম্ভোগবিভোগ দব্ব[৪] কইরাছি বজ্জনা॥


  1. অইব=হইবে।
  2. বেরথা=বৃথা।
  3. বরত=ব্রত।
  4. সম্ভোগবিভোগ দব্ব=ভোগবিলাসের দ্রব্যসামগ্রী।