পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রতন ঠাকুরের পালা
৩৩৩

পুষ্প তোলে মালা গাঁথে এহি[১] মাত্র কাম।
রাজার আন্দরে হইল মালীর খোস্‌নাম[২]২২

 [এদিকে দেশ জুড়িয়া রতন ঠাকুরের খোঁজ পড়িল। খুঁজিতে খুঁজিতে লোকজন জানিয়া গেল যে এই সজিন্তার দেশের মালী-মালিনীই রতন ঠাকুর ও তা’র প্রণয়িণী—সেই বৃদ্ধ মালীর কন্যা।]

(৯)

গাও না গেরাম লৈয়া ভালা যুক্তি যে করিল।
রঙ্গিলা বেশ্যারে কৈয়া সজিন্তা পাঠাইল॥
“শুন শুন রঙ্গিলা বেশ্যা বলি যে তোমারে।
আমার পুত্র পাগল হইয়া গিয়াছে বৈদেশে॥
অৰ্দ্ধেক রাজত্বি দিবাম আর সে দিবাম তার।
সোণাতে বান্ধিয়া দিবাম তোমার গলার হার॥”
পান খাইয়া রঙ্গিলা বেশ্যা আরে ঠোঁট কইরাছে লাল।
হাল আবেস্থা[৩] তার শুন দিয়া মন।
যাদুমন্ত্র জানে কন্যা পরথম যৌবন॥

দুষ্‌মনে সুহৃদ্ করে পান পড়া দিয়া।
সতী নারীর পতি সে যে নেয় ত ভুলাইয়া॥১১
এক ফোটা জল পইরা[৪] গায়ে ছিটা দিলে।
পাগলিনী হইয়া সতী আপন পতি ভুলে॥”১৩

(হায় ভালা) তবে ত রঙ্গিলা বেশ্যা আরে গমন না করিল। 
সজিন্তার দেশে গিয়া দাখিল হইল॥১৫


  1. এহি=এই।
  2. খোস্‌নাম=প্রশংসা।
  3. অবেস্থা=অবস্থা।
  4. জল পইরা=জলপড়া দিয়া। জলে মন্ত্র পড়িয়া, সেই জল ছিটাইয়া নানারূপ যাদু করা, রোগ ভাল করা প্রভৃতির প্রচলন এখনও দূর পল্লীগ্রামে দেখিতে পাওয়া যায়।