পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮২
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

“শুন গো বনের রাণী শুন মন দিয়া।
সুক্ষণে গেছিলাম রে বনে দেবের হইল দয়া॥
আজি যে পাইয়াছি কাষ্ঠ কি কহিব তোমারে।
সোণায় বিকাইব কাষ্ঠ দূরের নগরে॥
রন্ধনা বাড়ানা তোমার বিলম্ব বা কত।
সিনান করিতে যাই বাইড়া তোল ভাত॥
যতেক কাঠুরিয়ার পাইল বড় ক্ষিদা।
সিনান করিতে তারা নদীতে চলিল॥”
ঘন ঘন ডাকে রাজা উত্তর না পায়।
যতেক কাঠুরি কন্যায় তবে ত জিগায়॥
“শুন শুন কাঠুরাণী শুন মোর কথা।
রাঁধিয়া বাড়িয়া অন্ন রাণী গেল কোথা॥
সিনান করিতে রাণী গেল বুঝি ঘাটে।”
পাগল হইয়া রাজা ধাইয়া চলে ধাটে॥

যতেক ঘটন কথা কাঠুরাণী কয়।
নয়নের জলে দেখ নদী নালা বয়॥
কেউ বা ফুকুরি কান্দে কেউ বিলাপিয়া।
“তোমার রাণীরে লইল সাধু ত হরিয়া॥”
এই কথা ধর্ম্মিক রাজাগো যইখনে শুনিল।
কাত্যানির[১] কলাগাছ ভূমিত পড়িল॥

“হায় হায় রাজ্যধন হারাইলাম আপন কর্ম্মদোষে।
তোমারে লইয়াছিলাম গো রাণী মনের সন্তোষে॥


  1. কাত্যানির=কাত্যান অর্থাৎ প্রবল বৃষ্টিসহ ঝড়, পূর্ব্ববঙ্গে এই কথা খুব প্রচলিত আছে। কাত্যানির কলাগাছ অর্থ অত্যধিক ঝড়বৃষ্টি হইলে যেমন কলাগাছ পড়িয়া যায়।