মায়ের কান্দনে দেখ বিরখের পাতা ঝরে।
মায় সে জানে ঝিএর বেদন আর কে জানতে পারে॥
কথার ভাবে—
এই মত তারা আছে থাকে খায়। নিত্য নিত্য রোজ রাজ-কন্যা ঝাড়ু দিত যায়। রম রমা, যম যমা[১] পুরী। কুকুর বিলাইও সুখে আছে। সুখ নাই কেবল অভাগী রাজার মাইয়ার। একদিন হইল কি। রাজবাড়ী শীকারের বাদ্য বাজ্যা উঠ্ল। ঢোল ডগরা কড়া নকাড়া। হৈ হৈ রৈ রৈ। “কন্যা, একি শব্দ। কিসের বাজনা।” “আমার সাতভাই শীকারে যায়। শীকারের বাদ্য বাজে। অন্ধরাজা ভাবে মনে মনে। অনেকদিন না যাইলাম শীকারে। “কন্যা, আমি শীকারে যাইব। তুমি তোমার বাপের কাছে যাও। একটা ধুন[২] আর একটা শব্দবাদী[৩] বাণ লইয়া আস।”
গানে—
কন্যা কহে “শুন পতি আমার মাথা খাও।
বাঘ ভালুক বনে শীকারে না যাও॥
একে অন্ধ বনের পথ তা হইতে দুর্গম।
বনপন্থে গেলে হবে অতি দুর্ঘটন॥
তুমি ছাড়া পতি ওগো আমার কেহ নাই।
বিধির বিপাকে ত্যজিল বাপ ভাই॥
সুতের সেওলা যেমন সুতে করে ভর।
তোমারে হারাই পাছে তেই সে মোর ডর॥
সুখ ছাড়িয়া করবাম গো পতি দুঃখের ভরসা।
সে দুঃখ ছাড়িয়া গেলে কেবল নিরাশা॥