পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীরালনী

না করিব ছান লো ধাই, না খাইব অন্ন।
দারুণ জ্বরেতে মোর অঙ্গ ছিন্ন ভিন্ন॥
চক্ষু দুটি হইল মোর রক্তের আকার।
মাথার বিষে মরি লো ধাই দেখি অন্ধকার॥
চল্যা গেল ধাই সব কন্যা রইলো পড়িয়া।
এই মতে গেল দিন শয্যা সামালিয়া॥

* * * *

রজনী দুপর কালে কন্যা ধীরে কথা কয়।
এই ভাবে থাকা কন্যা পরাণ সংশয়॥
বিদায় দেহ চন্দ্রমুখী কন্যালো বিদায় কর মোরে।
পরাণে বাঁচিলে দেখবা তোমার দুয়ারে॥
বনে বনে তল্লাস না করি দেখমু তোমার মায়।
প্রাণ থাকিলে হইব দেখা কহি যে তোমায়॥
বিদায় লইয়া রাজার পুত্র পন্থে মেলা দিল[১]
কন্যার চক্ষের পানি পালঙ্গ ভাসিল॥
কান্দে মেঘমতী কন্যা ভূমে লুটাইয়া।
ভিনদেশী নাগর সনে হইল গোপন বিয়া॥
বিধাতার নির্ব্বন্ধ কথা খণ্ডন না যায়।
দিবসে দেখিয়া স্বপন যেন হায়(১—৫২)

(৬)

হেথায় রাজার পুত্র নাগর দুলাই।
রাত্র দিবা ভাবে কন্যা অন্য চিন্তা নাই॥
আহা কন্যা জীয়ালনী কেমনে পাইব।
জীরা বিনা পরাণ মোর কেমুনে রাখিব॥


  1. মেলা দিল=যাত্রা করিল।