সন্ন (স্বর্ণ) মালা
সন্নমালা পালাটি শ্রীযুক্ত চন্দ্রকুমার দে দুই বৎসর পূর্ব্বে ময়মনসিং হইতে সংগ্রহ করেন। সম্পূর্ণ পালাটি পাওয়া যায় নাই। যাহা পাওয়া গিয়াছে তাহাতে ২৭৮ পঙ্ক্তি আছে। এই পালাটির মধ্যে ছন্দের একটা বৈচিত্র্য আছে। স্থানে স্থানে পয়ার কিংবা ত্রিপদী এই দুই প্রচলিত ছন্দের কোনটিই অবলম্বিত হয় নাই। ঘটক-কারিকা, ডাক ও খনার বচন প্রভৃতিতে যে স্বল্পাক্ষর ছন্দ দৃষ্ট হয় এই পালার মধ্যেও সেইরূপ। ৭৷৮৷৯৷১০ অক্ষরের ছত্র আছে। পালাটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় পাওয়া গিয়াছে, সুতরাং ইহাতে চরিত্রগুলি ফুটিয়া উঠে নাই। কিন্তু নায়িকার যে একনিষ্ঠ প্রেমের আভাস এই অসমাপ্ত কাব্যে পাওয়া যায়, তদ্দ্বারা মনে হয় যে পালার শেষভাগে তিনি খুব গৌরবমণ্ডিত হইয়া উঠিয়াছিলেন। প্রাচীন পালাসাহিত্য ভাল করিয়া পাঠ করিলে দেখা যাইবে যে সৰ্পদষ্ট স্বামীর প্রাণলাভের জন্য সতী-পত্নীর প্রাণান্ত চেষ্টা শুধু বেহুলা চরিত্রেই বর্ণিত হয় নাই। পূর্ব্ব কালের বহু উপাখ্যানে নায়িকাদের এইরূপ প্রচেষ্টার উদাহরণ দেখা যাইত। বেহুলার উপাখ্যান একটি বিশেষ ধর্ম্মের অন্তবর্ত্তী হওয়াতে সাধারণ্যে তাহার প্রচার খুব বেশী হইয়াছে। কিন্তু দেশময় বেহুলা-জাতীয় স্ত্রী-চরিত্রের উদাহরণ ছিল। পরবর্ত্তী বেহুলা উপাখ্যানগুলি যে সেই সব দৃষ্টান্ত দ্বারা পুষ্টিলাভ করিয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই।
বাগানে কোন ফুলটি ঝরিয়া পড়ে এবং কোনটি বা সম্পূর্ণ সৌন্দর্য্যসম্পদে মণ্ডিত হইয়া শাখায় ফুটিয়া উঠে। আমাদের প্রাচীন সাহিত্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক বেহুলা বিলীন হইয়া গিয়াছেন। মনসাদেবীর বরে সাহ সদাগরের কন্যা অমরবর লাভ করিয়াছেন। সন্নমালা পালাটিতে স্বভাব-সৌন্দর্য্যের বর্ণনা অনেক স্থলে খুব চিত্তহারী হইয়াছে। রাজকন্যা বনবাসিনী হইয়া রাজপ্রসাদ পরিত্যাগপূর্ব্বক যে গভীর জঙ্গলে বাস