পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মহীপাল

 কিছুদিন পূর্ব্বে মনসুরউদ্দীন নামে আমার এক ছাত্র বাঙ্গালার এম. এর ফিফ্‌থ ইয়ার ক্লাসে পড়িবার সময় আমায় জানান যে তিনি মহীপাল সম্বন্ধে একটি ছোট পালা সংগ্রহ করিয়াছেন। এই সংবাদে আমি খুব উৎসাহ বোধ করিয়াছিলাম। যতদূর মনে পড়িতেছে সে ১৯২৮ সনের কথা।

 পালাটি হাতে পাইয়া কিন্তু আমার উৎসাহ কতকটা শিথিল হইল। পালাটি মাত্র ২৬ ছত্রের। বহুদিন ধরিয়া মহীপালের পালাটি আমি সংগ্রহ করিবার জন্য চেষ্টিত ছিলাম। তেওতা রাজপরিবারের ৺প্রাণশঙ্কর রায়ের নিকট শুনিয়াছিলাম যে রঙ্গপুরস্থ তাঁহাদের বিস্তীর্ণ জমিদারীর কোথাও কোথাও গায়কেরা সম্পূর্ণ মহীপালের গানটি গাহিতে পারে এবং তিনি নিজেই এ গান শুনিয়াছেন। পালাটি নাকি এত দীর্ঘ যে আগাগােড়া শেষ করিতে গায়কদের তিন রাত্রি লাগে। প্রাণশঙ্করবাবু আমাকে অবিলম্বে সমস্ত পালাটি সংগ্রহ করিয়া দিবেন বলিয়া প্রতিশ্রুত হন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ ইহার অল্প কয়েকদিন পরেই তিনি মারা যান।

 ইহার পর আমি আমার আত্মীয় অধ্যাপক শ্রীমান্ প্রিয়রঞ্জন সেনের নিকট পত্র লিখিয়াছিলাম। তিনি তখন রঙ্গপুরের কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনা করিতেন। তিনি কিছুদিন ইহা সংগ্রহের চেষ্টা করিয়া আমায় জানান যে, কোন কোন গায়ক এখনও এ পালা গাহিয়া থাকে এ খবর পাইলেও তিনি তাহাদের সঠিক সন্ধান পান নাই। সেখানকার একটি বারবনিতার সমস্ত গানটি নাকি কণ্ঠস্থ ছিল। কিন্তু অধ্যাপক মহাশয় তাহার সহায়তা গ্রহণ করিতে রাজী হন নাই। তাহার পর ১৯২১ সালে আমার বন্ধু মিঃ ডোনাল্ড ফ্রেজার রঙ্গপুরের ম্যাজিষ্ট্রেট হইয়া আসেন। আমি তাঁহার কাছেও এই পালা-সংগ্রহের জন্য অনুরোধ করিয়া চিঠি লিখি। তাঁহারও যে এই পালা-উদ্ধারের আন্তরিক চেষ্টা ছিল নিম্নলিখিত (অনূদিত) পত্রাংশ হইতেই