পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

G8 পুর্ববঙ্গ शैडिका একেবারে যায় নাই। মাঝে মাঝে কতকটা বিকৃত রুচি এবং অশিক্ষিত পরিহাস্যরসিকতার বর্বরতা তঁহার কাব্যে ঢুকিয়ছে। একটি উদাহরণ দিতেছি । যখন তরুণ সওদাগর তাহার স্ত্রীর নিকট বিদায় চাহিতে যাইয়া বিদায় পাইলেন না, অথচ বাণিজ্যে যাইতেই হইবে, তখন তিনি কি করিবেন। চিন্তা করিতে লাগিলেন । তিনি তামাক খাইবার জন্য র্তাহার স্ত্রীকে আগুন আনিতে বলিলেন । মহিলাটি স্বামীর বিদেশগমন-প্ৰস্তাবে বিরক্ত হইয়াছিলেন। তিনি এই আব্দারে চুপ করিয়া রহিলেন। তখন তাহার বীরবার স্বামী তাঁহাকে একটা ঘুষি মারিলেন। সেই ঘুষি খাইয়া রমণী অজ্ঞান হইলে পর সওদাগর বিদেশ-যাত্রার সুবিধা পাইলেন । কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, এই নিরক্ষর পল্লী-কবিদের মধ্যে যাহারা শ্রেষ্ঠ তাহারা অৰ্দ্ধ-বর্বর শিক্ষিতাভিমানী প্ৰকাশকদের অপেক্ষা অধিকতর রস গ্রাহী এবং তাহদের ‘ রসিকতাও এরূপ উদ্ভট রকমের নহে । চট্টগ্রামের গুজরা পোষ্ট অফিসের অধীন নয়াপাড়া গ্রামের মকবুল আহাম্মদ এই পালাগানের অার একটা সংস্করণ নোয়াখালি-যন্ত্রে প্রকাশ করেন । ১৯২০ খৃষ্টাব্দে ইত্যার ৬ষ্ঠ সংস্করণ হইয়াছিল। পল্লীগীতি-প্ৰকাশকদের যে সমস্ত দোষের কথা উল্লেখ করিয়াছি, এই সংস্করণটিতে নূ্যনাধিক পরিমাণে তাহার সকল গুলিই পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। সুখের বিষয়, এই সংস্করণটি খুব বৃহৎ নিচে । চট্টগ্রাম প্ৰভৃতি অঞ্চলে ভেলুয়ার গান পল্লীবাসীদের প্রাণের কথা। এই গান শুনিয়া এখনও শত শত্ৰ, নর-নারীব হলদিয় বেদনাতুর হইয়। উঠে, কত শত অশ্রুবিন্দু যে কৃষক রমণীদের নয়ন-পল্লব হইতে এই কাবোর উপর নিরন্তর বর্ষিত হয় তাহার ইয়াত্তা নাই । কিন্তু দুঃখের বিষয় পল্লীসাহিত্য-প্রকাশকের আদতে পালাটি বিকৃত করিয়া প্ৰকাশিত করাতে এই গান এখন আর তেমন নিবিড় রসধারায় পরিণত হইয়া উপভোগ্য হয় R|| || বাজারে প্রকাশিত পুথি সহজে পাওয়া যায় ; সুতরাং কে আর যত্ন করিয়া আদিত পােল৷ মুখস্থ করিপে ? বিশেষতঃ, নিরক্ষর কৃষকেরা নিজেরা লিখিতে জানে না যে, তাহারা কোন বৃদ্ধ পল্লীগায়েনের নিকট হইতে উহা শিখিয়া লইবে । সুতরাং এই প্ৰকাশিত সংস্করণগুলিই এখন পল্লীগায়েনদের