পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা “ “দেশে আছে চাপার ফুল ফুটে থাকে গাছে। সেও চাপা মলিন হবে। এ কন্যার কাছে ৷” সেই পূৰ্বরাগের সময় হইতে গল্পের গাথুনি জমাট হইয়াছে এবং এই গানটিতে প্ৰকৃত কবিত্বের ছটা পড়িয়াছে। সদ্যঃ সু তা আয়না বিবির কক্ষে জলের কলসী । সে গৃহের আঙ্গিনায় নবাগত তরুণ অতিথিকে দেখিয়া লজিক্ততভাবে গাত্রের আদ্র বসন টানিয়া পৃষ্ঠদেশ আবৃত করিল। কিন্তু পৃষ্ঠবিলম্বিত সুদীর্ঘ কেশপাশ আবৃত করিতে পারিল না। তাহার মুখখানি “লাজে রাঙ্গা|” হইল । সে যুবককে অতিক্ৰম করিয়া কি ভাবে অন্ত” পুরে প্ৰবেশ করবে। তাহার পথ পাইল না “ চলিতে চাহিলে কন্যার নাহি উঠে প৷ ৷ ” সদাগর চলিয়া গেল । প্ৰথম দর্শনেই আয়নার প্রাণে অনুরাগ জন্মিল । সে নদীর ঘাটে জল আনিতে যাইয়া প্রত্যেকটি ডিঙ্গার প্রতি সতৃষ্ণ দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিত । এইভাবে আশায়-নিরাশায় অনেক দিন কাটিয়া গেল । তারপরে তাহার পিতার মৃত্যু হইল এবং সে গ্রামে আর সে থাকিতে পারিল না। তাহার এক দূরসম্পৰ্কীয় আত্মীয়ের বাড়ীতে যাইয়া সে বহুকষ্টে দিনযাপন : করিতে লাগিল ৷ এদিকে উজ্জ্বল সদাগর বাণিজ্য করিয়া ফিরিবার পথে ভেরামনা নামক নদী উত্তীর্ণ হইয়া শিবার বঁাকের নিকট নৌকা নোঙ্গর করিল। এইখানে তাহার মানসী প্ৰতিমাকে দেখিতে পাইবে— এই আশায় সে পাগলের ন্যায় কন্যার বাড়ীর দিকে ছুটিল। কিন্তু সে গ্রামের কেহ তাহাকে কন্যার সন্ধান দিতে পারিল না । ভাগীদারের কাছে বিদায় লইয়া উজ্জ্বল সদাগর বলিল “আমার মায়ে কইওরে ভাগীদার বাড়ীতে গিয়া । তোমা পুত্তর উজ্জ্বল গেছে ফকির হুইয়া ॥ আমার মায়ে কইওরে ভাগীদার তোমারে জানাই । , তোমার পুত্ৰ উজ্জ্বল সাধু পরাণে বেইচ্যা নাই। । \ আমার মায়ে কইওরে ভাগীদার যদি মায়ে পুছে । তোমার পুত্রু পূব দরিয়ায় ডুবে যে মরেছে।