পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ গীতিকা চিত্ৰাপিতের ন্যায় দাঁড়াইয়া নীরবে অশ্রুপাত করিতে লাগিল। তখন গদগদকণ্ঠে শাশুড়ী বলিলেন, “তুমি যদি আমার সেই আয়না, আর দয়া করিয়া ঘরে আসিয়াছ, তবে আমি ভিক্ষা করিয়া খাইব, তথাপি তোমাকে ছাড়িয়া দিব না। তুমি যদি আমার সেই আয়না, তবে আমি তোমার জন্য সমাজ ও জাতি ছাড়িব । তোমার দুখিনী মাকে ছাড়িয়া যাইও না, তাহাতে যদি আমাদের ঘর গৃহস্থলী না হয়, তবে জঙ্গলে যাইয়া বাস করিব, তথাপি তোমাকে ছাড়িব না।” শাশুড়ীর কান্না শুনিয়া আয়না তাহার খোপাবাঁধা চুল খুলিয়া ফেলিল । বেসাতির জিনিষপত্ৰ মাটিতে ফেলিয়া দিল । সে পাগলিনীর মত যাইয়া কুরুঞ্জিয়াদিগের নৌকায় প্রবেশ করিল এবং চীৎকার করিয়া বলিল, “এই দেশ ডাকাইতের দেশ, এখানে মুহূৰ্ত্ত কালও থাকিব না, শীঘ্ৰ নৌকা ছাড়িয়া দাও।” চাদের ভিটা ছাড়াইয়া নৌকা অতিদ্রুত মধ্যনদীতে প্ৰবেশ করিলা । সে নদীর উপরে ঘূর্ণনশীল পক্ষীদিগের নিকট মনে মনে প্রার্থনা করিল, সে যে সে গ্রামে আসিয়াছিল, তাহা যেন তাহার স্বামী না শুনিতে পায়। সে আরও বলিল, “তুমি নূতন স্ত্রী এবং পুত্ৰ লইয়া সুখী হও । অভাগিনী আজি দরিয়ায় পড়িয়া মরিবে । আমি জন্মের মত তোমার চাঁদ মুখ দেখিয়া আসিয়াছি। তুমি সুখে থাক, এই আমার শেষ কামনা।” এই বলিয়া “আষাঢ়িয়া তোড়ের নদীতে ঢেউ ভেসে যায়। কঁচা সোনার তনু জলোতে মিশায় ৷ মা নাই বাপ নাই নাই রে সোদর ভাই । মরিলে কঁদিবে সুহৃৎ, হারালে বিশ্রায় ॥” বিহু: ; ; ১৫:শ উজ্জ্বলকে কে বলিল তোমার “পঞ্জিক্ষণী” বাসা খুজিতে আসিয়াছিল, “সেই মুখ, সেই চোখ, ভাল| সেই ত সকল রে। এসেছিল। অভাগিনী তোমায় দেখিবারে {