পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা Šbe ዓ আমরা অনেক অবান্তর বিষয় বরদাস্ত-এমন কি উপভোগও করিয়া থাকি । রচনার কোন অংশে যদি আমরা কালিদাস বা অন্য কোন কবির ছায়াপাত দর্শন করি তবে আমরা ঘটনার সূত্র ভুলিয়া যাইয়া কাব্য-ভাগ উপভোগ করিয়া থাকি । এই ভাবে শিক্ষিত সম্প্রদায্যের রচনায় ঘটনা-বহির্ভূত নানা বাজে কথা থাকে। অনেক সময়ে পল্লবিত ভাষার মোহে আমরা দুই চারি পত্ৰ পৰ্য্যন্ত একনিশ্বাসে পড়িয়া যাই, সেগুলি যে অধিকতর সংক্ষিপ্ত করিলে কাব্যের বিষয় আরো বেশী হৃদয়গ্ৰাহী এবং বাহুল্যবৰ্জিত হইতে পারিত তাহা মনেও করি না। চাষার এই সকল শিক্ষালব্ধ উপকরণ দ্বারা কোনরূপ : প্রভাবান্বিত হয় না, তাহারা আদ্যন্ত গল্পের আঁট সাঁট বঁধুনিটি চায় : এই জন্য | ଗion! দুনীতিপূর্ণ এই উপাখ্যান পাঠ করিবার সময় আমাদের কোনও স্থানে ধৈৰ্য্যাচুৰ্গতি বা অবসাদ ঘটে না। কৌতুকপ্রবণ ক্রীড়াশীল ভাষার অবিরাম গতিতে আমরা অনায়াসে পাতার পর পাতা পড়িয়া যাই।। গল্পটির আর একটি প্রধান আকর্ষণ এই যে পুস্তকখানি আগাগােড়ী বঙ্গের হাট, বাট, মাঠ, পুকুর, আমজামের কুঞ্জ, পাপিয়া ও কোকিলোর এবং নানা দেশজ পুষ্পের কথায় পরিপূর্ণ। কাব্যভাগে পারিবারিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক চিত্রগুলি সমস্তই বঙ্গদেশীয়। এই খাঁটি বাঙ্গালার মূৰ্ত্তি, চালচিত্রের শত শত দোষ সত্ত্বেও, আমাদের হৃদয়গ্ৰাহী হইয়াছে। কবিত্ব অথবা অলঙ্কার-শাস্ত্রের বিশেষ কোন পরিচয় ইহাতে নাই, কিন্তু বাঙ্গালা দেশের কোন এক বিশেষ যুগের নিখুত একখানি চিত্র হিসাবে ইহা মূল্যবান। এই পালাটি নােয়াখালী জেলার অন্তর্গত লামারচর নিবাসী শ্ৰীযুক্ত মনোরঞ্জন চৌধুরী, এম. এ. মহাশয় কর্তৃক সংগৃহীত। ইনি কতক সময়ের জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পালা, ংগ্ৰাহকের কাজ করিয়াছিলেন । শ্ৰী দীনেশচন্দ্ৰ সেন