পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डूभिक এই পালাগানটির একটা বৈশিষ্ট্য আছে, তৎ-সম্বন্ধে পরে বলিতেছি। যদিও ইহাতে কোন ভণিতা পাইলাম না এবং কবির সম্বন্ধে কোথাও কোন ইঙ্গিত নাই, তথাপি তিনি যে একজন মুসলমান কৃষক ছিলেন সে সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই। অপরাপর অনেক পালার মত এটতেও হিন্দুমুসলমানে যে উদার শ্ৰীতিসম্বন্ধ ছিল, তাহার নিদর্শন আছে। কবি শ্রদ্ধার সহিত আমাদের প্রেমের দেবতা কানাইয়ের উল্লেখ করিয়াছেন। ভাগীরথীর চরণে উহার ভক্তিপুষ্পাঞ্জলি পড়িয়াছে। এখন মুসলমানদের কাণে এই কথাগুলি একটু বেসুরা বলিয়া বাজিতে পারে। কিন্তু অনেকেই জানেন দরাফ খাঁ সংস্কৃতে গঙ্গাবিন্দনা লিখিয়াছিলেন। হিন্দুরা যেরূপ মহরম উৎসবে যোগদান করিত, একসময়ে মুসলমানেরাও সেইরূপ হিন্দুর উৎসব মানিয়া তাহাতে আনন্দ করিত । আমরা ত্রিপুরাবাসী গোলমামুদ রচিত “উনমত্তা ছিন্নমস্তা এ রমণী কার’ প্ৰভৃতি বহু শাক্ত সঙ্গীত র্তাহার নিজের মুখে শুনিয়াছি। ঢাকা জেন্দাবাহার গলিতে গরীব হােসেন নামক মুসলমান জমিদারের বাড়ীতে এক সময়ে সমারোহের সহিত শীতলা পূজা অনুষ্ঠিত হইত। প্রায় দেড়শত বর্ষ পূর্বের মীর্জা হােসেন আলি ও সৈয়দ জাফর খাঁরচিত অনেকগুলি কালীসঙ্গীত দেখিয়াছি। মুসলমান বৈষ্ণব কবির মধ্যে অনেকের নাম সর্বত্র বিদিত * । স্বয়ং আকবর শাহ হিন্দিভাষায় চৈতন্যবন্দনা লিখিয়াছিলেন, সেই গানটি ৬/জগবন্ধু ভদ্র মহাশয়ের গৌরপদতরঙ্গিণী • সৈয়দ মর্ভূজা, দেখি ভিখন, সৈদ আলায়োল, সেখ। ফতেন, সেখ লাল, ফকির হাবিব, শাল বেগ, নসীর আহম্মদ প্রভৃতি কবির পদ বৈষ্ণব সাহিত্যে সুপরিচিত। ৬/ রমণীমোহন মলিক “মুসলমান বৈষ্ণব কবি’ নামক ক্ষুদ্র পুস্তিকায় ইহাদের অনেকের পদের নমুনা দিয়াছেন। তিনি পদকল্পতরু হইতে সেগুলি সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন।