পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8SV পূর্ববঙ্গ গীতিকা সাহেব এই বাসভূমির অবস্থান নির্দেশ করিয়াছেন । এই স্থানে ভ্রাতৃদ্বন্দ্বে বিতাড়িত সম অবস্থাপন্ন মহারাজ গোবিন্দমাণিক্যের সহিত সুলতান সুজার সাক্ষাৎ হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে উভয়ের এত শ্ৰীতির ভােব জন্মিয়াছিল যে বিদায়কালে সুজা কৃতজ্ঞতার চিহ্নস্বরূপ বহুমূল্য “নেমচা।” হার ও একটা হীরকাঙ্গুরীয় মহারাজ গোবিন্দমাণিক্যাকে উপহার প্ৰদান করেন । সুজার শোচনীয় পরিণামের পর গোবিন্দমাণিক্য গোমতী নদীর তীরে একটি মসজিদ নিৰ্ম্মাণ করিয়া বন্ধুর স্মৃতি-তৰ্পণ করিয়াছেন । কুমিল্লা সহরের অনতিদূরে ঐ সুজা মসজিদ এখনও অতীতের সাক্ষ্য প্ৰদান করিতেছে। কুমিল্লার অন্তর্গত “সুজানগর” গ্রামটী এক সময়ে এই মসজিদের ওয়াকফ (wakf) সম্পত্তি ছিল বলিয়া “রাজমালায়” উল্লেখ আছে । “সুলতান সুজা কিছুকাল চট্টগ্রামে অবস্থান করিয়াছিলেন । সহরের বক্ষঃস্থলে আন্দরকিল্লার অনুচ্চ পাহাড়ের উপর যে সুবৃহৎ মসজিদ দৃষ্টিগোচর হয়, অনেকেই ইহাকে সুজা মসজিদ নামে অভিহিত করেন। চট্টগ্রাম সহরে “সুজা কাট্টগর” নামে একটী মহল্লা আছে। এই সকল প্রামাণিক তথ্যের দিকে দৃষ্টিপাত করিলে বাৰ্ণিয়ারের উক্তি খণ্ডন করিবার সাহস হয়। বিশেষতঃ তখন সমুদ্রপথ নিরাপদ ছিল না। অপরিমিত ধনরত্ন লইয়া পর্তুগীজ জলদসু্যর সঙ্গে ঢাকা হইতে সমুদ্রপথে সুজা যে আরাকান রওনা হইয়াছিলেন এইরূপ বৰ্ণনা সম্ভবপর বলিয়া মনে হয় না । আমরা এখানে বাৰ্ণিয়ারের সহিত এক মত না হইয়া স্থিরভাবে বিশ্বাস করি যে সুজা মেঘনা নদী পার হইয়। হস্তিপুষ্ঠে আরোহণ করেন এবং ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের পার্বত্য ভূমি অতিক্ৰম করিয়া চট্টগ্রামের দক্ষিণ সীমায় নাফ নদীর তীরে উপনীত হন । চালাস স্টয়ার্ট লিখিয়াছেন, ‘সুজা নাফ নদীর পরপারে উপস্থিত হইলে আরাকানের রাজ প্ৰতিনিধি র্তা ঠাকে অতিশয় সম্মানের সহিত গ্ৰহণ করিয়াছিলেন । প্রথমতঃ সুজার প্রতি আরাকানরাজের সহৃদয়তার কথা সমস্ত ঐতিহাসিকের মুখে শুনা যায়, সুজা ও তাহার পরিজনবর্গের বাস করিবার জন্য আরাকানরাজ একটী রমণীয় প্ৰাসাদ নিৰ্ম্মাণ করাইয়া দিয়াছিলেন । কিন্তু এই বন্ধুত্ব অধিকদিন স্থায়ী হইল না। সুজার কন্যার