পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डूमिका 8&S R গীতিকাটী বাড়বানলের মত-ইহার একদিকে তরঙ্গায়িত নয়নরারি এবং অন্যদিকে ধূমায়মান বহ্নি ! শোকে মুহ্যমান। সুজাপুত্রী এক সময়ে 不伺T5〔豆可一 “দুরগত্যা পরাণ আমার না যায় নিকলি । তুইষর আইল্যা হৈয়েরে বুগ উদ্ভব জ্বলি জ্বলি ?” আবার অন্য সময় রোষকষায়িত চক্ষু এবং অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত গালিবর্ষণ । এখনও এই অঞ্চলের নীচজাতীয়া মুসুলমান রমণীর মুখে, “হতীনর পুত” (সপত্নীপুত্র) সম্বোধনে গালাগালি করিতে শুনা যায়। সুজা-পুত্রীর মুখেও সেই সুর শুনা যাইতেছে-- “কন সতীনর পুতর সঙ্গে করিলি ছুম্বুক ॥” এইরূপ গালাগালি ঐতিহাসিকের চােখে বিসদৃশ মনে হইতে পারে ; কিন্তু ইহা চাষা-কবির ভাবপ্রবণতার একটা নিদর্শন । “বিশুদ্ধ বাঙ্গালায় ‘নাইয়র’ শব্দটীর প্রতিশব্দ খুজিয়া পাওয়া বড়ই দুষ্কর। কোন আত্মীয়ের বাড়ীতে স্ত্রীলোকেরা কিছুদিনের জন্য গমন করিলে তাহাকে ‘নাইয়ার করা” বলা হয়। সুজাপুত্রীকে আরাকান-রাজ-অন্তঃপুরে নাইয়র দেওয়া হইয়াছিল। এই গীতিকার প্রথম ছত্রের এই উক্তি হইতে বুঝা যায় যে হয় ত প্ৰথমেই উভয়ের বন্ধুত্ব অতিশয় জমাট বাধিয়া গিয়াছিল। আরাকানরাজের উপর এতদূর প্রত্যয়স্থাপন অস্বাভাবিক বলিয়া মনে ইহঁতে পারে, কিন্তু নানাদেশ হইতে বিতাড়িত ও বিড়ম্বিত সুজার পক্ষে এই কাৰ্য্য একবারেই অসম্ভব বলিয়া ধারণা হয় না। ঘটনার পর ঘটনার আঘাত তঁহার মনকে ভগ্নপ্ৰায় করিয়া তুলিয়াছিল। এমন সময়ে আরাকানরাজের আশ্বাসবাণীতে ও আশ্রয়দানে সুজার মন গলিয়া পড়া অসম্ভব নহে। কিন্তু পরে যখন আরাকানরাজ এই কন্যার সহিত বিবাহের খ্রিস্তাব করেন, তখন সুজা শিহরিয়া উঠিলেন, তখন তাহার বংশ-মৰ্যাদার *থা মনে হইল এবং শিরায় শিরায় উষ্ণ শোণিত উছলিয়া উঠিল।