পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

() o পূর্ববঙ্গ গীতিকা পরিচিত। হিন্দুরা ইহা মনোহরর্থাতে রূপান্তরিত করিয়াছে। মৈমনসিংহ গেজেটীয়ার ভ্ৰমক্ৰমে মনোহরখাকে ইশাখার বংশধর বলিয়া পরিচয় দিয়াছে । এ কথা অবশ্যই সত্য যে ইশার্থ এক ক্ষত্ৰিয় হিন্দুরাজার সন্তান। কিন্তু কস্তাইলের দত্ত পরিবারের সঙ্গে তাহার কোন সম্বন্ধ ছিল না । আর একটি প্ৰবাদ এই যে, এই পরগণার যিনি প্রতিষ্ঠাতা তিনি ফতেখাঁর বংশসস্তৃত। ত্রিপুরার রাজমালায় উল্লিখিত আছে যে, ইশাখা ত্রিপুরা রাজার সেনাপতিস্বরূপ শ্ৰীহট্টের নবাব ফতেখাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করিয়াছিলেন । তাহার বিস্তৃত বিবরণ আমরা দ্বিতীয় খণ্ডে প্ৰকাশিত ইশাখার গানের ভূমিকায় দিয়াছি। জনপ্রবাদ এই যে, নূর হায়দার চৌধুরী, র্যাহার নামে ১৭৮৭ খৃষ্টাব্দে এই পরগণার জরীপ ও পুনরায় স্বত্ত্ব সাব্যস্ত হয়, তিনি ফতেখাঁর বংশধর। কিন্তু কস্তাইলের দত্ত পরিবারের সঙ্গে মনুরখানের কি সংস্রব তাহা ভাল করিয়া বোঝা গেল না । ফতেখার সঙ্গে শেরাসাহের কোন সম্পর্ক ছিল, ইহা আমরা সেই ভূমিকায় উল্লেখ করিয়াছি। ইশাখার পৌত্র বিখ্যাত মনুরার্থীর সঙ্গে জোয়ানসাহীর প্রতিষ্ঠাতা মনুরথার কোন সংস্রব ছিল না। এই গীতের নায়ক ভগদত্তের সঙ্গে মহাভারতের প্রসিদ্ধ ভগদত্তের কোন সম্বন্ধ নাই। আমাদের দেশের ঐতিহাসিক যুগের কোন কীৰ্ত্তিমান পুরুষের নাম পাইলেই সাধারণে তাহার পৌরাণিক যুগের জগদ্বিখ্যাত বীরগণের নামের সঙ্গে এক করিয়া ফেলে এবং ইতিহাসচর্চার দ্বার একেবারে রুদ্ধ করিয়া নিশ্চিন্ততা লাভ করে । এই ভাবে ভীম কৈবৰ্ত্তের জাঙাল পাণ্ডুপুত্রের রচিত এই বিশ্বাস এতদিন পৰ্য্যন্ত জনসাধারণের হৃদয়ে বদ্ধমূল ছিল, এবং সাভারের দ্বাদশ শতাব্দীর রাজা, ওদুনা-পদুনার পিতা হরিশচন্দ্ৰ এতদিন পৰ্য্যন্ত লোককল্পনায় স্বৰ্গমর্ত্যের সন্ধিস্থলেস্থিত হরিশচন্দ্ৰ হইয়াছিলেন। সুতরাং ভগদত্তকে টানিয়া লইয়া পৌরাণিক যুগে প্রতিষ্ঠিত করাতে আমরা বিস্ময়ান্বিত হই নাই। ইনি সম্ভবতঃ ৯ম খৃষ্টাব্দে রাজত্ব করিয়াছিলেন। আমরা এই গীতিকার শুধু এই অংশটি বিশ্বাস্য বলিয়া মনে করি যে, ভগদত্ত নামক কোন রাজা তাহার মাতৃআজ্ঞা শিরোধাৰ্য্য করিয়া অতি বৃহৎ একটি দীর্ঘিকা খনন করেন এবং সেই দীর্ঘিকায় ভারতীয় দ্বাদশতীর্থের জল ঢালিয়া উহা পবিত্র করেন । এ কথার মধ্যেও কতকটা