পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

ডাল নাই পাল নাই ফুটিয়া না রইছেরে ফুল।
বন্ধুরে পাইলে আমার কিসের জাতি কুল[১]২০

(৩)

নদীরে কোন দিকে যাও বইয়া
কোত্থেকে আইলেরে নদী, কিসের লাগিয়ারে([২])
কোন দিকে যাও বইয়া। (ধুয়া)
সোণার বরণ পরভাতরে আবের চাকামাখা।
কোন পাখী উড়িয়া আইল সোণার বরণ পাখা([৩])॥
জমীনে পড়িলে পাখী জমীন খানা বেড়ে।
আশমানে উড়িলে পাখী আশমান না জুড়ে॥


  1. এই সকল পদ হইতে স্পষ্ট বোঝা যায় চণ্ডীদাসের রাধা-কৃষ্ণ পদগুলির ভিত্তি কোথায়। এসকল চণ্ডীদাসের পরবর্ত্তী কি না বলিতে পারি না, কিন্তু সমস্ত বাঙ্গলা দেশে যেসকল কবিতা কোন পূর্ব্ব যুগে ফুলের মত ছড়াইয়া পড়িয়াছিল, তাহারাই পরবর্ত্তী বৈষ্ণব কবিতার যোগান দিয়াছে, তাহা স্পষ্ট বোঝা যায়। এই পদটি পড়িলে স্বভাবতই চণ্ডীদাসের
    “এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা, কেমনে আইলে বাটে।
    আঙ্গিনার মাঝে বঁধুয়া ভিজিছে দেখে যে পরাণ ফাটে॥”

    প্রভৃতি পদ মনে পড়িবে।
    এই প্রেমবৃক্ষের ডালপালা নাই, সাংসারিক হিসাবে ইহার তলার কোন আশ্রয় পাইবে না। কেবল একটি মাত্র ফুলের আকর্ষণ ইহার আছে। কবি বলিতেছেন, সাংসারিক আশ্রয় চাইনা, বঁধুকে পাইলে জাতিকুলমান না থাকিলেই বা কি?
  2. এই যে আমার জীবনে প্রেমের স্রোত, ইহা কোথা থেকে আসিয়াছে, এবং ইহা আমাকে কোথায় লইয়া যাইবে? নদীকে সম্বোধন করিয়া নায়িকা নিজের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করিতেছেন।
  3. এই সোণার যৌবন স্পর্শে আমার জীবনকে স্বপ্নময় করিয়া কোন্ সোণার পাখী আমার কাছে আসিল? আবের চাকামাখা = মাঝে মাঝে অভ্রখণ্ড।