ফুলকুমার দেশে আসিয়া এই কথা শুনিল, কিন্তু বিশ্বাস করিল না। তখন রাণী লোকজনের লগে চক্রান্ত কইরা রাজার যে পাট ঘোড়া সেই ঘোড়াকে মারিয়া তাহার রক্ত কাঞ্চনমালার শোয়নের ঘরের দুয়ারে, তার বিছানায় ঢালিয়া রাখিল, এবং রাজপুত্ত্রকে দেখাইল। এদিকে দেশ জুইড়া লোকে বলাবলি করিতে লাগিল, চল আমরা দেশ ছাইড়া চইলা যাই। রাজা ডাকিনী কন্যা দেশে আনিয়া হাতী ঘোড়া খাওয়াইয়া ফেলিয়াছে। আর কিছুদিন থাকিলে আমাদেরও খাইয়া ফেলিবে। ফুলকুমার উপায় না দেখিয়া দুষ্কিণী কাঞ্চনমালাকে বনমধ্যে নির্ব্বাসন দিল।[১]
(১৯)
কতেক সুখ কতেক দুখ কতক চাকামাকা।[২]
এই ছিল আস্মানে চান্নি এই সে মেঘে ঢাকা॥২
মানুষের ভাগ্যে সুখ যেমন পদ্মপাতার জল।
এই আছে এই নাই করে টলমল॥৪
আজ যে রাজা দেখ সুখের সীমা নাই।
কাইল সে দারুণ পথে ঘাটে ভিক্ষা মাইগ্যা খাই॥৬
আইজ দেখ যার আছে লক্ষ টাকা কড়ি।
কাইল দেখ সেই জন পথের ভিখারী॥৮
আইজ যে ছিল ধনপতি শিরে ধরে ছাতি।
কাইল সে দেখ গাছতলাতে দুখে পোহায় রাতি॥১০
আইজে দেখ যেই জন সাতপুত্রের বাপ।
কাইল সে দেখ দুষ্মণ কপাল[৩] তার দিল শাপ॥১২
আইজ যে ছিল যেই জন রাজার ঘরাণী[৪]।
কাইল তারে বিধাতা কৈল কাননবাসিনী॥১৪