পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাঞ্চনমালা
১১৭

সময় কালে দেয় বিয়া মাও আর বাপে।
যে নারীর পুরুষ নাই কি করব তার রূপে॥২৮
পুরুষ ছাড়া হইলে নারী কে রাখে কুলমান।
বাঁচা মরা এ সংসার তার দুই-ই সমান॥৩০

এতেক বলিয়া কন্যা কান্দিতে লাগিল।
কান্দিয়া চক্ষের জল মুছিয়া লইল[১]৩২
স্বামীর সুখের নাইগ্যা আমি যাইবাম ছাড়িয়া।
সোয়ামীরে কর সুখী নয়ন দান দিয়া॥৩৪

(২৫)

 তখন সন্ন্যাসী কাঞ্চনমালাকে লইয়া আর একটা দাড়াক বৃক্ষের মূলে গেল। সেইখানে গিয়া সেই বৃক্ষের মূলে তিন টুকী মারিল। তখন সেই বৃক্ষ হইতে এক কন্যা বাহির হইয়া আসিল। কাঞ্চনমালা দেখ্‌ল যে, সে তার সতীন কুঞ্জমালা। সন্ন্যাসী কাঞ্চনমালার হাতে এক ফল দিয়া কইল যে, এই ফল খাইলে তোমার স্বামীর চক্ষু ভালা হইবে। এই ফল তুমি কুঞ্জমালাকে দান কর।

এই ফল সুধা নহে[২] কন্যা শুন মোর কথা।
আমার কথা শুইন্যা মনে না ভাবিও ব্যথা॥
ফলের সহিত কর সোয়ামীরে দান।
মনে না ভাবিও দুঃখ কাতর না হও প্রাণ॥
মনে দুঃখ লইয়া যদি দান কর শেষে।
অন্ধ না পাইবে চক্ষু কহিলাম বিশেষে॥

তখন কাঞ্চনমালা কোন কাম করে।
নিজের সুখ দুঃখের কথা পাসরণ করে॥


  1. এই যে চক্ষের জল সে মুছিয়া লইল, তাহা আর ফেলিল না। স্বামীর ইষ্টের নিমিত্ত সে আত্ম বলিদান দিতে প্রস্তুত হইল।
  2. সুধা নহে=শুধু এই ফলটি নহে। ইহার সঙ্গে স্বামীকেও দিতে হইবে।