পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

 ভণিতায় অধরচাঁদ পালারচয়িতা বলিয়া নিজের উল্লেখ করিয়াছেন। পালারচনাকাল গীতোক্ত ঘটনার অব্যবহিত পরে অর্থাৎ সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ বলিয়া মনে হয়। বর্ত্তমান পালায় পরবর্ত্তী গায়ক সম্প্রদায়ের হস্তে গানের মূল গ্রাম্যভাব ও ভাষার যে বিশেষ পরিবর্ত্তন হইয়াছে তাহা মনে হয় না।

 “মহুয়া,” “দেওয়ান ভাব্‌না,” “ধোপার পাট” প্রভৃতি পালার কবিগণ যেমন বাহুল্যবর্জ্জন ও ভাষাসংযম দেখাইয়াছেন, বর্ত্তমান পালার কবি স্থানে স্থানে তাহার একটু ব্যতয় করিয়াছেন। ষষ্ঠ সর্গ ১৭—২০ ও ২৭—৩৪ ছত্রে এবং সপ্তম সর্গে ৯—১১ ছত্রে বাক্য-পল্লব দ্বারা পাণ্ডিত্য প্রকাশের চেষ্টা কতকটা কাব্য রসের হানি করিয়াছে; মাঝে মাঝে কবি দার্শনিক গবেষণা দ্বারা গ্রাম্যগীতির সরলতা নষ্ট করিয়াছেন। কিন্তু গানের মুখ্য বর্ণনীয় বিষয় অর্থাৎ কমলারাণীর মহান্ আত্মোৎসর্গের চিত্রের নিকট এই সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোষ ঢাকা পড়িয়া গিয়াছে।