পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
পূর্বববঙ্গ গীতিকা

এক শান্তি আমার মায়ে আরেক শান্তি আমি।
(ওরে)  আরেক শান্তি কওনা যেমন আমার ছোট ভগ্নী॥”

“এহি ত আষাঢ় মাসরে নীল্যা গাঙে নতুন পানি।
(ওরে)  তোমার পতি মরছেরে নীল্যা তাওত আমি জানি॥”
“যদি আমার পতি মরতরে সাধু শব্দ যাইত দূর[১]
দিনে দিনে মৈল্যান হৈত আমার শিন্তার[২] সিন্দূর॥”

“এহি ত শ্রাবণ মাসরে নীল্যা খ্যাতে পাকা ধান।
বেজোড়া কোঁড়ার ডাকে তোমার উড়িবে পরাণ॥”

“ডাক ডাকুক ডুম্বারে ডাকুক পাঁজর করলাম শ্যাল।
বেজোড়া[৩] কোড়ার ডাকে আমি ছাড়ব রাজার দ্যাশ।
(ওরে)  তেওনা হব সাধুরে আমি হারে তোমার পরতাশ॥”

“এহি ত ভাদ্দর মাসে গাছে পাকা তাল।
জল খাইতে দিবরে ঝারি নীল্যা ভাত খাইতে থাল।”
“কেউ খাইল খের্ত্তরে অন্ন হারে কলা আর কোদলী।
দিনে দিনে পুষ্কুরে জোগায় যেমন বাড়ীর ম্যাইল্যানী[৪]॥”
“এহি ত আশ্বিন মাসে হারে এ দুর্গা ভবানী।
আতপ চাউল আর কাঁচারে দুগ্ধ যেমন ব্রাহ্মণের ভোজনী।”


  1. শব্দ যাইত দূর = সে কথা রাষ্ট্র হইয়া পড়িত।
  2. শিস্তার = সিথির।
  3. বেজোড়া = জোড় ছাড়া, একক, বিরহী! বিরহী কুড়ার ডাক শুনিয়া তোমার প্রাণে ব্যথা জাগিয়া উঠিবে।
  4. দিনে...ম্যাইলানী = ভাদ্রমাসে প্রতি দিন পুকুরে নূতন জলের জোগান হইয়। জল বাড়িতে থাকে। মালিনী যেন নিত্য নিত্য ফুলের জোগান দেয়।