পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ইশা খাঁ। (৩৪৭—৩৯০)

 দেওয়ান ইশাখাঁ মসনদ আলি সম্বন্ধে তথ্যসংগ্রহের জন্য সর্ব্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় গ্রন্থ—আবুলফজলকৃত আইন-ই-আকবরী। আবুল ফজল লিখিয়াছেন, ইশাখাঁর পিতা বঙ্গদেশের সেলিমখাঁ ও তাজখাঁ কর্ত্তৃক নিহত হন, এবং তাঁহার পুত্রদ্বয় অর্থাৎ ইশমাইল এবং ইশা বাল্যাবস্থায় ক্রীতদাসরূপে বিক্রীত হইয়াছিলেন; কিন্তু পরে ইশার পিতৃব্য কুতুবুদ্দিন তুরাণ অঞ্চল হইতে তাহাদিগকে উদ্ধার করিয়া বঙ্গদেশে আনয়ন করেন। অতঃপর ইশা ভাটি-অঞ্চলের শাসন-কর্ত্তৃত্ব এবং দ্বাদশ ভূম্যধিকারীর অধিনায়কত্ব লাভ করেন। এইজন্য আবুল ফজল তাঁহাকে “মজবন্ ভাটি” আখ্যায় আখ্যাত করিয়াছেন। ইশাখাঁ নানাভাবে মোগল সম্রাটকে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন। (আইন ই-আকবরী, ১ম খণ্ড, ৩৪২ পৃঃ)।

 ঢাকার ভূতপূর্ব্ব সিভিল সার্জ্জন, ডাক্তার ওয়াইজ ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দের এসিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকায় ইশা খাঁ সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ লিখিয়াছিলেন। এই মুসলমান যুবক কিরূপে বর্ত্তমান কিশোরগঞ্জ মহকুমার অধীন জঙ্গলবাড়ীতে প্রথম আবাস স্থাপন করিয়া প্রসিদ্ধ দেওয়ান বংশের প্রতিষ্ঠা সাধন করেন, তাহা উক্ত প্রবন্ধে বিশদভাবে আলোচিত হইয়াছে (২০৯—২১৪ পৃঃ)। উক্ত সনের এসিয়াটিক সোসাইটির জর্ণ্যালে (৩নং পত্রিকার ২০২—২০৩ পৃষ্ঠায়) ওয়াইজ সাহেব বিক্রমপুরের চাঁদরায় ও কেদার রায় সম্বন্ধীয় একটি প্রবন্ধেও ইশাখাঁর সম্বন্ধে কিছু কিছু সংবাদ দিয়াছেন। ১৯০৯ খ্রীষ্টাদের এসিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকায় ৩৬৭—৭৫ পৃষ্ঠায় ষ্টেপলটন সাহেব “সপ্তদশ শতাব্দীর সাতটি কামান সম্বন্ধে সমালোচনা” শীর্ষক ইংরেজী প্রবন্ধে দেওয়ানবংশ ও তাঁহাদের পূর্ব্বপরিচয় সম্বন্ধে কতিপয় ঐতিহাসিক প্রশ্নের বিচার করিয়াছেন।

 ঢাকা হইতে ১৮৯১ খ্রীষ্টাব্দে দেওয়ান শোভন দাদখাঁ ও দেওয়ান আজিম দাদখাঁর নিয়োগে লিখিত, “মসনদ আলি ইতিহাসে” গ্রন্থকার