পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

লাগিলেন। সেই আবাসস্থানটিকে কেন্দ্র করিয়া শিকারে বহির্গত হওয়ায় সুবিধা হইবে এবং তাহা ছাড়া বন কাটিয়া রাজ্যের পরিসর বৃদ্ধি করিবারও সুযোগ হইবে, ইহাও তাহার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। (রাজমালা ১৯৩ পৃষ্ঠা)।

 এদিকে সাহবাজ খাঁ পরাস্ত হইয়া প্রতিশোধ লইবার জন্য প্রস্তুত হইতে ছিলেন। ইশাখাঁও বিপুল সৈন্যের অধীশ্বর হইয়া এমন একটি স্থান খুঁজিতে ছিলেন, যেখানে দিল্লীশ্বরের আক্রোশ হইতে নিরাপদ হইয়া তিনি নূতন নূতন রাজ্য জয় করিয়া নিজের ক্ষমতাবৃদ্ধির চেষ্টা করিতে পারেন। পালাগানগুলির কোন কোনটিতে সম্রাট সেনার সহিত ইশাখাঁর যুদ্ধ এবং পলায়নের বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া হইয়াছে। এই সময়েই অর্থাৎ ১৫৮৫ খ্রীষ্টাব্দে ইশাখাঁ নিরপরাধ কোচ-পতি রামহাজরা ও লক্ষ্মণহাজরা ভ্রাতৃদ্বয়কে রাত্রি-কালে আক্রমণ করেন। তাঁহারা একটি সুড়ঙ্গপথে প্রাসাদ হইতে পলায়ন করিয়া প্রাণ রক্ষা করিয়াছিলেন। তাঁহাদের প্রাসাদের চিহ্ন এখনও বিদ্যমান। কোচরাজাদিগের রাজধানী জঙ্গলবাড়ীই ইশাখাঁর পরিবারের মুখ্য-আবাসে পরিণত হইয়াছিল।

 ইশাখাঁর পৌত্র মনুয়ার খাঁর পালায় তৎ-কর্ত্তৃক ঢাকায় নির্ম্মিত প্রাসাদের উল্লেখ আছে। এই বিশাল সৌধ যেখানে শোভা পাইত, সেই স্থানটিকে এখন “দেওয়ান বাগ” বলে।[১] ইহা নারায়ণগঞ্জের উত্তর পূর্ব্বদিকে

  1. ডাক্তার ওয়াইজের মতে, এই উদ্যানবাটিকার বর্গায়তন ১৬৯ একার পরিমিত ভূমি ছিল। ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দের এসিয়াটিক সোসাইটি-পত্রিকার “খিজিরপুরের ইশাখাঁ মসনদালি” শীর্ষক প্রবন্ধ (২০৯-২১৪ পৃঃ) দ্রষ্টব্য।