পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১৬
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

কোন সখী যায় দেখ হেলিয়া ঢলিয়া
যৌবনের ভারে ভাঙ্গে আটখান হইয়া।
লোটন[১] বান্ধিছে কেহ কার কেশ খোলা
কাহার গলায় গাঁথা চাম্পা ফুলের মালা॥১৬
আঁখিতে কাজল কারও কপালে সিন্দুর
কাঁকলে বাজিছে কারও রতন ঘুঙ্ঘুর।
কারও পিন্ধন পাটের শাড়ী কারও নীলাম্বরী
আইল জলের ঘাটে যতেক সুন্দরী॥২০

তার মধ্যে অধুয়া যে দেখিতে কেমন
তারার মধ্যেতে যেন চান্দের কিরণ।
ভাবিয়া ভাবিয়া অঙ্গ হইয়াছে মৈলান
তবু অঙ্গে জ্বলে রূপ অগ্নির সমান॥২৪
তৈল কাঁকাই বিনে চুল হইয়াছে জটা
তবু ত জিনিয়া রূপ যেন চান্দের ছটা।
জলের ঘাটেতে কন্যা দেখে দাঁড়াইয়া
ঘাটেতে আছে বান্ধা রঙ্গ ভাওয়ালিয়া॥২৮
তাহার উপরে জামাল দেখিতে কেমন
রাত্রি পোষাইলে ভানু দেখিতে যেমন॥

চাইর দিগে ফুট্যা রইছে নানান্ রঙ্গের ফুল
তাহার উপরে দেখ ভ্রমরার রুল[২]৩২
ভাওয়ালিয়া হইতে জামাল অধুয়ারে দেখে
দেখিয়া কন্যার রূপ তাক্ লাগি থাকে।
কন্যারে দেখ্যা জামাল পাগল হইল
লৈয়া খোদার নাম ভাওয়ালিয়া ছাড়িল॥৩৬


  1. লোটন=খোপা বিশেষ।
  2. রুল=রোল, ঝঙ্কার, কলরব। ময়মনসিংহ, শ্রীহট্ট ও ত্রিপুরা প্রভৃতি অঞ্চলে অনেক স্থলে ‘ও’কারের উচ্চারণ ‘উ’কারের মত।