পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S80 ভারতবর্ষ । ফলতঃ, যেখানেই জ্যোৎস্নার বিমল ভাতি, সেখানেই ধৰ্ম্মের বিজয়-বৈজয়ন্তী উডতীয়মান । আবার যেখানেই তমিস্রার বিকট প্রতিচ্ছবি, সেখানেই ধৰ্ম্মশক্তির অভাব ! স্থূলতঃ, ভারতের রাজা, রাজ্য ও ধৰ্ম্ম-যেন পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে সম্বদ্ধ ! 输 棒 পূৰ্ব্বানুস্মৃতি । ধৰ্ম্ম শক্তির বিদ্যুৎপ্রবাহ হৃদয়ে ধারণ করিয়া, অশেষ-ধী-শক্তিসম্পন্ন মৌৰ্য্যরাজ চন্দ্ৰগুপ্ত শক্তি-সঞ্চয়ে সাম্রাজ্য-স্থাপনে সফলকাম হইয়াছিলেন। ত্যাগের আদর্শে অনুপ্ৰাণিত হইয়া, চন্দ্ৰগুপ্ত যে ভোগের পরাকাষ্ঠা-প্ৰদৰ্শন করিয়াছিলেন ;-নিষ্কাম কৰ্ম্মৰূপ অন্ত্রের সহায়তায় তিনি যে সকাম-ব্ৰতের উদযাপন করিয়াছিলেন, অনাসক্তির পাশ্বে তিনি আসক্তির যে প্ৰতিচ্ছবি অঙ্কিত করিয়াছিলেন ; তাহাতেই তিনি অমরত্ব লাভ করিয়া আছেন!! জন্মজরা মরণশীল পার্থিব সম্বন্ধে সম্বন্ধ-বিশিষ্ট হইলে, চন্দ্রগুপ্তের প্রতিভা-রশ্মি কোনকালে কাল-সাগরে বিলীন হইত ! চন্দ্ৰগুপ্ত ধৰ্ম্মকে আশ্রয় করিয়াছিলেন ; ধৰ্ম্ম তাহাকে আশ্রয় কবিয়াছিল ;-তাই র্তাহার পুণ্য-স্মৃতি আজিও ইতিহাসে উজ্জ্বল হইয়া আছে। তার পর, রাজচক্ৰবৰ্ত্তী অশোকের মহীয়সী মহিমায়-ইতিহাসের আব্ব এক অঙ্ক সমলিঙ্কত। একমাত্ৰ ধৰ্ম্মশক্তির প্রভাবেই তিনি অনবত্ব লাভ কবিয়াছেন । ধৰ্ম্মশক্তিকে আশ্ৰয় করিয়া তিনি জন্মজরা মরণশীল সংসারের সন্তাপ বিদূরণে বদ্ধপরিকর হইয়াছিলেন ; তাই তিনি আজ “জগজয়ী অশোক’ নামে পরিচিত । যেদিন হইতে তিনি ধৰ্ম্মেব আশ্রয় গ্ৰহণ করিয়াছেন ; যে দিন হইতে র্তাহার। প্ৰাণ ধৰ্ম্মের উন্মাদনায় উন্মাদিত হইয়াছে ; যেদিন হইতে তিনি ধৰ্ম্ম-সাধনায় আত্মোৎসর্গ করিতে পারিয়াছেন ; সেই দিন হইতেই তঁহার পুণ্যস্মৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত। পৰ্ম্মশক্তিই যে প্রতিষ্ঠার মূলীভুত, রাজচক্ৰবৰ্ত্তী অশোক তাহার এক শ্রেষ্ঠ আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করিয়া গিয়াছেন। চন্দ্ৰগুপ্ত ও আশোকের অভু্যদয়ে বৈষম্যে যে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, তঁহাদের লোকান্তরের পর আবার সে সাম্যে বৈষম্য উপস্থিত হয়। অশেষ আয়াস-স্বীকারে সে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল । কিন্তু সে সকলই বৃথা হইয়া গেল ! যে শক্তির যে প্রেরণায় তঁাহারা ধৰ্ম্মক্ষেত্ৰ ভারতক্ষেত্রে ধৰ্ম্মরাজ্য-প্ৰতিষ্ঠায় সমর্থ হইয়াছিলেন, তঁহাদের লোকান্তরের পর সে শক্তির সে প্রতিষ্ঠা বিপৰ্যন্ত হয়—কেন্দ্রীভূত রাজশক্তি বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়ে। বহু-আয়াস-প্রতিষ্ঠিত বহুশ্রমে অর্জিত মৌৰ্য্য-সাম্রাজ্য অচিরে ধ্বংসমুখে পতিত হইল। ভারতের সৌভাগ্য-গগনে দুৰ্ভাগ্য-দুৰ্দৈবের প্রতিচ্ছবি প্ৰকট-হইয়া পড়িল । ভারতের সেই দুদিনে একমাত্ৰ ধৰ্ম্মশক্তিই তাহাকে রক্ষা করিয়াছিল। ভারতে শক-সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাত কনিক্ষ সে দুর্দিনে ভারত-তরণীর কর্ণধারী-রূপে দণ্ডায়মান হইয়াছিলেন ; তাই ভারত আবার একবার গৌরবে গরীয়ান হইয়াছিল। রাজচক্ৰবৰ্ত্তী অশোক বৌদ্ধধৰ্ম্মের যে শক্তি প্ৰস্তুত করিয়া রাখিয়াছিলেন, সেই শক্তি-প্রবাহ শক্তিশালী কনিক্ষের হৃদয়ে এক অভিনব অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করিয়াছিল। তাই নবীন