পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের গুপ্ত-নৃপতিগণ । 86 গুপ্তবংশীয় নৃপতিগণের যে শাখা উত্তরভারতে প্ৰভাব বিস্তার করিয়াছিলেন, তাহদের ংশ-পরিচয় পূৰ্ব্বেক্তরূপ নির্দিষ্ট হইয়া থাকে। গুপ্ত-বংশের অপরাপর শাখা ভারতের বিভিন্ন স্থানে-মালবদেশে, গৌড়রাজ্যে এবং আরও বহু বিভিন্ন ভূভাগে বিস্তৃত হইয়া পড়ে। তত্তৎপ্রদেশে তাহদের প্রতিষ্ঠার পরিচয় পাওয়া যায়। খৃষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর শেষভাগ হইতে আরম্ভ করিয়া খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পৰ্য্যন্ত তঁহাদের প্রভাব অক্ষুঃ ছিল। সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভে তাঁহাদের প্রভুত্ব-প্রতিপত্তি খর্ব হইয়া আসে। তখ। যত পুনরায় অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। প্ৰতিষ্ঠার পরিচয়ে । কি ভাবে কি সুত্রে গুপ্তরাজগণ ভারতের “একছত্ৰ-সমাটি” পদে অধিষ্ঠিত হইয়াছিলেন, তাহাদের উৎখান ও পতন কি ভাবে সংঘটিত হইয়াছিল, তাহ প্ৰদৰ্শন জন্যই বক্ষ্যমাণ প্রসঙ্গের অবতারণা। গুপ্ত-বংশে বহু প্ৰতাপশালী রাজা জন্মগ্ৰহণ করিয়াছিলেন। তঁহাদের কীৰ্ত্তি বিশ্ববিএ’ত । গুপ্ত-বংশের রাজত্বকালে ভারতের সর্বতোমুখী উন্নতিব পরিচয় পাওয়া যায়। সাহিত্যে, বাণিজ্যে, জ্ঞান-গরিমায়— গুপ্ত-গণের রাজত্বকালে ভারত আর একবার পৃথিবীর ইতিহাসে শীর্যস্থান অধিকার করিয়াছিল। গুপ্ত-গণেব রাজত্ব-কালেই বঙ্গদেশের গৌরব-গরিমা প্ৰতিষ্ঠিত হয় । সে পরিচয়, চতুর্থ খণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে প্রদত্ত হইয়াছে। ভারতের সর্বতোমুখী শ্রেষ্ঠত্বের যে নিদর্শন এই সময় প্রাপ্ত হওয়া যায়, আমরা ক্ৰমে ক্ৰমে গুপ্ত-বাজগণের আলোচনা প্রসঙ্গে তাহ প্ৰদৰ্শন করিবার প্রয়াস পাইতেছি। ংশপরিচয় ও জাতিনিৰূপণ । গুপ্ত-বংশের প্রাচীনত্ব অবিসংবাদিত । পুরাণাদিতে সে নিদর্শন বৰ্ত্তমান। বিষ্ণুপুরাণে, বায়ুপুরাণে, ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে ও মৎস্যপুরাণে গুপ্তবংশেব উল্লেখ দেখিতে পাই । ভবিষ্যরাজবংশ-কখন-প্রসঙ্গে পুরাণসমূহে গুপ্তরাজগণের পৃথিবী-ভোগের বিষয় পরিবর্ণিত আছে। সেখানে দেখিতে পাই,-গুপ্তরাজগণ, মথুৰা, অনুগঙ্গ, প্ৰয়াগ, অযোধ্যা ও মগধ-এই সকল জনপদ উপভোগ করিবেন ; আর নাগ-বংশীয় সাত জন মথুরাপুরী ভোগ করিবেন। বিষ্ণুপুরাণের চতুর্থাংশে, চতুৰ্ব্বিংশ অধ্যায়ে, “নবনাগাঃ পদ্মাবত্যাং কান্তিপুৰ্য্যাং মথুরায়ামনুগঙ্গাপ্রয়াগং মগধ গুপ্তাশ্চ ভোক্ষন্তি”–এবম্বিধ উক্তি পরিদৃষ্ট হয় । তাহাতে গঙ্গা ও প্রয়াগের সন্নিকটস্থ কান্তিপুরী ও মথুরায় মাগধগণ ও গুপ্তগণ রাজা হইবেন, প্ৰতিপন্ন হয়। বায়ু পুরাণেও একই উক্তি দেখিতে পাই। ভবিষ্য-রাজবংশ-বর্ণন-প্রসঙ্গে সেখানে আছে, - “মথুৱাঞ্চ পুৱীং রম্যাং নাগা ভোক্ষন্তি সপ্তবৈ ৷ অনুগঙ্গং প্ৰয়াগঞ্চ সাকেতমগধাংস্তথা ৷ এতান জনপদান সৰ্ব্বান ভোক্ষ্যন্তে গুপ্তবংশজাঃ ”- -বায়ুপুরাণ, ৯৯ অধ্যায়, ৮২-৮৩ শ্লোকঃ ।