পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের গুপ্ত-নৃপতিগণ ! S8°ነ সপ্রমাণ হয়,-“গুপ্ত’ নামক জনৈক নৃপতি গুপ্ত-বংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মহারাজ গুপ্তনামে পরিচিত ছিলেন। আর তঁহারই নামানুসারে গুপ্ত-বংশের নামকরণ হইয়াছিল।

বিতণ্ডার কারণ । যাহা হউক, প্রত্নতত্ত্ববিদগণের মত-বিরোধের কারণ-শাস্ত্রোক্ত জাতি-বিভাগ। শাস্ত্ৰে ব্ৰাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়, বৈশ্য ও শূদ্র-চারিটী প্রধান জাতির নামোল্লেখ আছে। কিন্তু বৈদ্য, স্বর্ণকার, কুম্ভকার, সুত্রধর, তন্তুবায় প্রভৃতি অন্য কোনও জাতিব স্পষ্ট উল্লেখ নাই। ঐতিহাসিকগণ তাই সিদ্ধান্ত করেন,-বৈশ্য জাতি বিভিন্ন ব্যবসায় অবলম্বন করায়, তঁাহারা কেহ বৈদ্য, কেহ স্বর্ণকার, কেহ কুম্ভকার প্রভৃতি আখ্যা প্ৰাপ্ত হইয়াছেন। মূলতঃ সকলেই বৈশ্য ; বিভিন্ন ব্যবসায় অবলম্বন করায়, তঁাহাবা সেই সেই ব্যবসায়ের উপযোগী আখ্যা প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন। এইরূপ প্ৰস্তাবনায় তাহারা বলেন,-বৈশ্যগণেব এক শ্রেণী চিকিৎসা-ব্যবসায় অবলম্বন করেন। তঁহারা পুৰুষানুক্ৰমে সেই ব্যবসায়ে নিযুক্ত আছেন বলিয়া, সেই জাতীয় ব্যবসায়মূলক নামোপাধি তাঁহাদের বংশানুক্ৰমিক পদবী মধ্যে গণ্য হইয়াছে। তাই চিকিৎসাব্যবসায়ী বৈশ্যগণ ‘বৈদ্য” আখ্যা প্ৰাপ্ত হন ; আর তাহা হইতেই তঁহাদেব উপাধি “গুপ্ত’ হইয়াছে। এই হইতেই বঙ্গ7দশেব বৈদ্যগণ ‘সেনগুপ্ত’, ‘দাসগুপ্ত” প্ৰভৃতি উপাধি ব্যবহার করিয়া থাকেন। র্যাহারা এই মতেৰ পবিপোষাক, তাহাবা গুপ্ত-বংশীয় নপতিদিগকে ‘বৈদ্য”-জাতীয় বলিয়াই সিদ্ধান্ত করেন । এদিকে আবাব ‘আশ্বিলায়ন গুহাসুত্ৰে’ দেখিতে পাই, সুত্ৰকার কহিতেছেন,--ব্ৰাহ্মণগণ “শৰ্ম্মণী’, ক্ষত্ৰিয়গণ-“বৰ্ম্মণ’ এবং বৈশ্যগণ “গুপ্ত” উপাধি ব্যবহাৰ কবিবেন । সুন্দগন্থের এবং “উদ্বাহ-তত্ত্বের’—“গুপ্তদাসাত্মকং নাম প্রশস্তং বৈশ্যশূদ্ৰয়োঃ” প্রভৃতি উক্তির অনুসরণে এক শ্রেণীর পণ্ডিতগণ গুপ্ত-দিগকে “বৈশ্য” জাতীয় প্রতিপন্ন করিবাব প্ৰয়াস পান। গুপ্ত-নৃপতিগণের নামের শেষে “গুপ্ত’ শব্দ দেখিযা পণ্ডিতগণ এই ৰূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়া থাকেন। র্তাহারা বলেন,-“বৈশ্যের উপাধি মাখন “গুপ্ত’, ‘দাস’ প্ৰভৃতি ; তখন ভারতের গুপ্ত-নৃপতিগণ “हेदथु” डिझ अछु खाऊि नरश्न । আবার র্যাহারা গুপ্তগণকে ব্ৰাহ্মণ বলিয়া নির্দেশ করেন, তাহারা মন্তব্যোব পরিপোষক যুক্তি-পরম্পরার উল্লেখে অসমর্থ হইলেও, গুপ্ত-দিগের ব্ৰাহ্মণ্য-ধৰ্ম্মের প্রতি অসাধারণ অনুরাগদৃষ্ট প্রোক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হন। তাহারা প্রায়ই আধুনিক দৃষ্টান্তের অবতারণা করিয়া থাকেন। হিন্দুর যেমন হিন্দু ধৰ্ম্মের প্রতি আকৃত্ৰিম অনুরাগ, মুসলমানের যেমন মুসলমান-ধৰ্ম্মের প্রতি প্ৰগাঢ় আনুবিক্তি ; সেইরূপ গুপ্তগণ ব্ৰাহ্মণ ছিলেন বলিয়াই তঁহারা ব্ৰাহ্মণ্য-ধৰ্ম্মের প্ৰতি অনুরক্ত ছিলেন । এবং ব্ৰাহ্মণ্য-প্ৰাধান্য প্ৰতিষ্ঠায় প্ৰয়াস পাইয়াছিলেন। 粥 আমাদিগের সিদ্ধান্ত । যাহা হউক, আমরা পূর্বোক্ত কোনও সিদ্ধান্তই অনুমোদন করি না। আমরা গুপ্ত-বংশীয় নৃপতিবৃন্দকে ‘ক্ষত্ৰিয়’ বলিয়াই নির্দেশ করি। তৎসম্বন্ধে আমাদের যুক্তি প্ৰদৰ্শন করিতেছি।